ঈদের আনন্দে যখন মুসলিম বিশ্ব মাতোয়ারা, তখন ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় নেমে আসে মৃত্যু আর ধ্বংস। ঈদুল আজহার দ্বিতীয় দিন, শনিবার (৭ জুন) ইসরায়েলি বাহিনীর বিমান হামলায় অন্তত ৭৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। সবচেয়ে ভয়াবহ হামলাটি হয়েছে গাজার সাবরা এলাকায়, যেখানে একটি আবাসিক ভবনে বোমা ফেললে প্রাণ হারান অন্তত ১৬ জন। খবর: আল-জাজিরা
গাজার সিভিল ডিফেন্স জানিয়েছে, ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও বহু মরদেহ আটকে রয়েছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, চাপা পড়ে থাকা মানুষের সংখ্যা ৮৫ জনের মতো।
গাজা সিভিল ডিফেন্সের মুখপাত্র মাহমুদ বাসেল গণমাধ্যমে বলেন, “এই হামলার আগে কোনো ধরনের সতর্কবার্তা দেওয়া হয়নি। এটা ছিল সরাসরি একটি বেসামরিক ভবনে বর্বর আঘাত। এটি নিখাদ হত্যাকাণ্ড।”
হামলার সময়কার অভিজ্ঞতা জানাতে গিয়ে এক বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনি, হামেদ কেহিল বলেন, “ঘুম ভাঙলো বিকট বিস্ফোরণে। চারপাশে ধ্বংসস্তূপ, আর্তনাদ আর ধুলোয় ঢেকে যাওয়া শরীর। ঈদের দিন আমাদের শিশুরা সাজতে পারেনি, বরং মরদেহ টেনে তুলতেই ব্যস্ত থাকতে হলো।”
স্থানীয় বাসিন্দা হাসান আলখোর জানিয়েছেন, ধ্বংস হওয়া বাড়িটি আবু শারিয়া পরিবারের। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “আল্লাহ যেন ইসরায়েলি সেনা আর নেতানিয়াহুর বিচার করেন।”
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী দাবি করেছে, এই হামলায় মুজাহিদিন ব্রিগেডের নেতা আসআদ আবু শারিয়াকে হত্যা করা হয়েছে। তারা বলছে, তিনি ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস-নেতৃত্বাধীন হামলার অন্যতম পরিকল্পনাকারী ছিলেন। হামাসও টেলিগ্রামে দেওয়া এক বিবৃতিতে আসআদ এবং তাঁর ভাই আহমেদ আবু শারিয়ার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে। বিবৃতিতে বলা হয়,
“এই হত্যাকাণ্ড প্রমাণ করে ইসরায়েল নিরীহ বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্য করেই একের পর এক নৃশংসতা চালিয়ে যাচ্ছে।”
গত অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া এই যুদ্ধ পরিস্থিতিতে গাজার জনজীবন কার্যত ধ্বংসের মুখে। ঈদের মতো গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় উৎসবেও তারা স্বজন হারানো, আহতদের চিকিৎসা আর ধ্বংসস্তূপে মরদেহ খোঁজার কাজেই ব্যস্ত।