বাংলাদেশের জনপ্রিয় অভিনেত্রী আজমেরি হক বাঁধনের জীবনে ঘটেছে সিনেমাকেও হার মানানো এক বাস্তব কাহিনি। নিজের অভিনয় জীবন নিয়ে যেমন আলোচনায়, তেমনি ব্যক্তি জীবনের নানা বিতর্ক নিয়েও বারবার উঠে আসছেন খবরের শিরোনামে।
এবার তিনি জানালেন, তাকে একাধিক দেশের গোয়েন্দা সংস্থার সদস্য বলে সন্দেহ করা হচ্ছে! সম্প্রতি নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সেই চাঞ্চল্যকর অভিজ্ঞতার বিস্তারিত তুলে ধরেছেন বাঁধন।
২০২১ সালে বলিউড নির্মাতা বিশাল ভরদ্বাজ পরিচালিত ‘খুফিয়া’ সিনেমায় কাজ করেন বাঁধন। সিনেমাটিতে তিনি ছিলেন ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’-এর একজন এজেন্ট। এই চরিত্রে অভিনয়ের সময় সহশিল্পী ছিলেন তাবু। কিন্তু সিনেমার প্রিমিয়ারে অংশ নিতে গিয়ে বাঁধন পড়েন বিপাকে। তার ভারতীয় ভিসা বারবার প্রত্যাখ্যাত হয়।
বাঁধনের ভাষ্য, “আমার ভিসা পাঁচবার বাতিল করা হয়। কারণ হিসেবে দেখানো হয় ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরের সঙ্গে তোলা একটি ছবি।” যদিও পরে দেশের একজন প্রভাবশালী বন্ধুর সহায়তায় এক মাসের সিঙ্গেল এন্ট্রি ভিসা পান তিনি।
কেবল ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’ নয়, বাঁধন জানালেন, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তাকে যুক্ত করা হয়েছে আরও কিছু গোপন সংস্থার সঙ্গে।
তিনি বলেন, “জুলাইয়ের গণ-অভ্যুত্থানের সময় আমাকে বলা হয় আমি সিআইএ’র এজেন্ট এবং ইউএসএইড থেকে অর্থ নিয়েছি। এরপর আবার বলা হলো, আমি জামায়াত কর্মী, কারণ আমি এক জামায়াত নেতার ছবি আমার প্রোফাইলে শেয়ার করেছিলাম।”
এর মধ্যেই গুঞ্জন ছড়ায়—তিনি ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের সদস্য। আর সম্প্রতি আবার তাকে ভারতের ‘র’ এজেন্ট বলা হচ্ছে।
এতসব গুজব ও সন্দেহের মাঝে সবচেয়ে আঘাত পেয়েছেন এক ঘনিষ্ঠজনের কথায়। বাঁধন জানান, “একজন কাছের বন্ধু, যিনি সরকারে আছেন, তিনি সরাসরি জিজ্ঞেস করলেন—টাকা খাইছো?”
এই কথায় ব্যথিত বাঁধন বলেন, “আমরা এমন এক সমাজে বাস করি, যেখানে কেউ কাউকে বিশ্বাস করে না। যেখানে মনে করা হয়, কেউ দেশকে ভালোবাসে না।”
এই ভিসা জটিলতা ও সন্দেহের কারণে বলিউড ও কলকাতার কয়েকটি কাজ হাতছাড়া হয়েছে বলেও জানান বাঁধন। তবে এতে ভেঙে পড়েননি তিনি। নিজের অবস্থান নিয়ে এখনও গর্বিত এবং আশাবাদী অভিনেত্রী বলেন, “আমি আমার মতোই থাকব, আমি জানি আমি কে।”