চাঁদপুরে হরিণা ফেরিঘাট এলাকায় মেঘনা নদীতে থেমে থাকা একটি জাহাজে ৭ জনকে খুনের ঘটনায় আকাশ মণ্ডল ওরফে ইরফানকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) সকালে কুমিল্লা জেলার র্যাব-১১ এর পাঠানো এক খুদে বার্তায় তথ্য জানা যায়।
র্যাব সূত্রে জানা গেছে, আকাশ মণ্ডল ওরফে ইরফানকে বাগেরহাট জেলার চিতলমারী এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। চাঁদপুরে জাহাজে হামলার শিকার ৮ জনের সাথে ছিলেন ইরফান। হত্যাকাণ্ডের ঘটনার পর থেকে তিনি নিখোঁজ ছিলেন।
মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) ৭ জনের মৃত্যুর ঘটনায় হাইমচর থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। জাহাজের মালিক মো: মাহাবুব মুর্শেদ অজ্ঞাতদের আসামি করে এ মামলাটি করেছেন।
হাইমচর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো: মহিউদ্দিন সুমন মামলার তথ্য নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, মঙ্গলবার রাতে ৩৯৬/৩৯৭ ধারায় মামলাটি দায়ের করেন জাহাজের মালিক মো: মাহাবুব মুর্শেদ।
হত্যার শিকার ব্যক্তিরা হলেন, গ্রিজার মো: সজিবুল ইসলাম, মাস্টার গোলাম কিবরিয়া, সালাউদ্দিন, আমিনুর মুন্সী, লস্কর মো: মাজেদুল ইসলাম ও বাবুর্চি রানা কাজী। এ ছাড়া গুরুতর আহত হয়েছেন ফরিদপুর সদর উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামের সেকান্দর প্রকাশ সেকেন্ড খালাসীর ছেলে সুকানী মো: জুয়েল (২৮)।
মামলার বাদী মো: মাহবুব মুর্শেদ এজহারে উল্লেখ করেছেন, আহত জুয়েলের গলাকাটা থাকায় সে কথা বলতে পারেনি। হত্যাকাণ্ডের ঘটনার বিবরণ দিতে পারেনি। সে সুস্থ হলে ডাকাতদের দেখলে চিনতে পারবেন বলে ইশারায় জানায়। তবে জুয়েলের সঙ্গে ইরফান নামে আরেকজন ছিলো বলে সে খাতায় লিখে জানায়। তবে তার ঠিকানা দিতে পারেনি।
ঘটনার পর পুলিশ ওই জাহাজটিতে পরিদর্শনের সময় ১টি রক্তাক্ত চাইনিজ কুঠার, ১টি ফোল্ডিং চাকু, ১টি মানিব্যাগ, নগদ ৮ হাজার টাকা, ২টি স্মার্ট ফোন, ২টি বাটন ফোন, ১টি বাংলা খাতা, ১টি সীল, ১টি হেডফোন জব্দ করা হয় বলেও মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।
নৌ পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, আহত জুয়েল বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। তাকে নিরাপত্তা দেয়া হচ্ছে।
এদিকে, জাহাজে খুন হওয়াদের মধ্যে ৬ জনের মরদেহ মঙ্গলবার বিকেলে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিহত পরিবারের স্বজনদের ২০ হাজার টাকার চেক এবং নৌ পুলিশের পক্ষ থেকে নগদ ১০ হাজার টাকা প্রদান করা হয়। তবে বাবুর্চি রানা কাজীর স্বজনরা উপস্থিত না হওয়ায় তার মরদেহ হস্তান্তর করা হয়নি।