ছাত্রলীগ নেতার পুকুর থেকে গভীর রাতে ৫ লাখ টাকার মাছ তুলে নেওয়ার অভিযোগ করা হয়েছে আওয়ামী লীগ ও কৃষক লীগ নেতাদের বিরুদ্ধে। রবিবার (২৪ মার্চ) রাতে শেরপুর উপজেলার কুসুম্বি ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি মিলনুর রহমান শেরপুর থানায় লিখিত অভিযোগ করেন।
অভিযুক্তরা হলেন, উপজেলার কুসুম্বি ইউনিয়নের খিকিন্দা পশ্চিম পাড়া গ্রামের আমিনুল হক (৩২), জামিল উদ্দিন (৪৪), মতিউর রহমান (৫২), ছানাউল হক (৪২), মো. মামুন (৩৫), শফিকুল ইসলাম (৪৫) ও সিরাজুল ইসলাম (৩৮)। স্থানীয়ভাবে দলীয় সূত্রে জানা যায়, বিবাদী গনের মধ্যে আমিনুল হক কুসুম্বি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। জামিল উদ্দিন একই ইউনিয়নের কৃষক লীগের সভাপতি ও মতিউর রহমান কুসুম্বি ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ও মো. মামুন স্থানীয়ভাবে আওয়ামী লীগের ইউনিয়ন কমিটির সদস্য। এছাড়া অন্যান্যরা স্থানীয়ভাবে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত।
অভিযোগের বাদি মিলনুর রহমান বলেন, তিনিসহ কুসুম্বি ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান গতবছর পুকুরটির একটি অংশ কিনে নেন। অন্য মালিকদের কাছ থেকে বাকি অংশ লিজ নিয়ে মাছ চাষ শুরু করেছেন। কিছুদিন ধরে প্রতিপক্ষরা তাদের মাছ চাষে বাধা দিয়ে আসছিল। স্থানীয়ভাবে একাধিক বিচার সালিশ করেও নিষ্পত্তি হয়নি।
সরকারদলীয় প্রভাব খাটিয়ে গত শনিবার (২৩ মার্চ) দিবাগত রাত আড়াইটা থেকে সাড়ে তিনটা পর্যন্ত তাদের পুকুরে থেকে জোরপূর্বক দেড় থেকে আড়াই কেজি ওজনের রুই ও কাতলাসহ বিভিন্ন ধরনের মাছ জোড়পূর্বক তুলে নিয়ে যায়। তুলে নেওয়া মাছের ওজন অন্তত ৩৬ মন। মূল্য অন্তত পাঁচ লাখ টাকা। তাৎক্ষণিক থানা পুলিশকে অবহিত করলেও কোন সহযোগীতা পাননি বলে তিনি জানান।
কুসুম্বি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল হান্নান উল্লিখিত বাদী ও বিবাদীগণের রাজনৈতিক পরিচয়ের সত্যতা নিশ্চিত করেন। তবে তারা ছাত্রলীগ নেতার ওই পুকুর থেকে মাছ তুলে নেওয়ার ঘটনার সাথে জড়িত কিনা তা তিনি জানেন না।
অভিযুক্ত কুসুম্বি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আমিনুল হক বলেন, আমি ঘটনাস্থলে ছিলাম না। যতদূর জানি পুকুরটি স্থানীয় মসজিদের সম্পত্তি। মসজিদ কমিটির লোকজন পুকুরটিতে মাছ চাষ করেন। উদ্দেশ্য প্রণদিতভাবে আমার নামে মিথ্যা অভিযোগ করা হয়েছে।
এ নিয়ে কুসুম্বি ইউনিয়ন কৃষক লীগের সভাপতি জামিল উদ্দিন বলেন, “আমি মসজিদ কমিটির কাছ থেকে পুকুরটি লিজ নিয়ে মাছ চাষ করেছি। মাছগুলো বিক্রি করে দিলে ক্রেতা সেগুলো তুলে নিয়ে গেছেন। পুকুর লুটের অভিযোগের সত্যতা নেই।“
অভিযোগ প্রাপ্তির সত্যতা নিশ্চিত করে শেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল করিম বলেন, অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত শুরু করা হয়েছে। সত্যতা পাওয়া গেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।