বগুড়ায় ঈদের সালামি না পেয়ে স্ত্রীর ওপর চরম ক্ষোভে ফেটে পড়েন স্বামী। একপর্যায়ে মুখে গ্যাস ট্যাবলেট ঢুকিয়ে স্ত্রীকে হত্যা করেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় স্বামী সাগর মিয়াকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
শুক্রবার (২১ জুন) দুপুরে গ্রেফতারকৃত সাগর মিয়াকে আদালতের মাধ্যমে বগুড়া জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এর আগে বৃহস্পতিবার দুপুরে বগুড়ার জেলার ধুনট পৌরসভার কার্যালয় এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
জানা গেছে, তাড়াশ উপজেলার থানাপাড়া এলাকার বাসিন্দা রহিম উদ্দিনের মেয়ে শাম্মি খাতুন (২২) প্রায় পাঁচ বছর আগে বিয়ে করেন ধুনটের সাগাটিয়া গ্রামের সাগর মিয়াকে। বিয়ের সময় যৌতুক হিসেবে চার লাখ টাকা দেওয়া হয়। প্রথমদিকে সংসার ভালোই চলছিল। তাদের ঘরে একটি তিন বছর বয়সী সন্তানও আছে।
কিন্তু অভাব অনটনের কারণে সাগর মাঝে মাঝেই শাম্মিকে বাবার বাড়ি থেকে আরও টাকা আনার জন্য চাপ দিতে থাকেন। টাকা না পেয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া হতো। পরিবারের লোকজনও শাম্মির ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালাতো বলে অভিযোগ রয়েছে।
পুলিশ ও মামলা সূত্র জানায়, গত ৩ জুন ঈদ উপলক্ষে ২০ হাজার টাকার জন্য স্ত্রীকে নিয়ে শ্বশুরবাড়ি তাড়াশে যান সাগর। কিন্তু টাকা না পেয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে সেদিনই ফিরে আসেন। পরে ১০ জুন দুপুর আড়াইটার দিকে আবার শুরু হয় পারিবারিক কলহ। একপর্যায়ে সাগর ও তার পরিবারের সদস্যরা শাম্মির মুখে জোর করে গ্যাস ট্যাবলেট ঢুকিয়ে দেন বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে।
অচেতন অবস্থায় প্রথমে শাম্মিকে ধুনট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে ১১ জুন সকাল সাড়ে ১০টায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
শাম্মির মৃত্যুর পরদিন তার মা চায়না খাতুন ধুনট থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। প্রাথমিক তদন্ত শেষে পুলিশ বৃহস্পতিবার সেটি হত্যা মামলায় রূপান্তর করে। মামলায় সাগর মিয়া ছাড়াও তার মা-বাবা সহ ছয়জনকে আসামি করা হয়েছে।
ধুনট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাইদুল আলম বলেন, আইনী প্রক্রিয়া শেষে শাম্মির মরদেহ পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃত “আসামি সাগর মিয়াকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।”