সিরাজগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত থাকায় প্রায় ১ লক্ষ মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। টানা ৬ দিন পর সিরাজগঞ্জ ও কাজিপুর পয়েন্টে যমুনা নদীর পানি কমতে শুরু করলেও এ জেলার বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত অবস্থায় রয়েছে।
যমুনার চরাঞ্চলের ৩৪টি ইউনিয়নের অন্তত ৮৩ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। পানির নিচে তলিয়ে গেছে সাড়ে ৬ হাজার হেক্টর জমির ফসল। বন্ধ রয়েছে ৭৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
সোমবার (০৮ জুলাই) দুপুর ১২টার দিকে সিরাজগঞ্জ হার্ড পয়েন্টে যমুনা নদীর পানির সমতল রেকর্ড করা হয়েছে ১৩ দশমিক ৪৯ মিটার। গত ২৪ ঘণ্টায় পানির সমতল মাত্র ১ সেন্টিমিটার কমেছে।
বন্যার পানি এখনো বিপদসীমার ৫৯ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আর কাজিপুর মেঘাই পয়েন্টে ১৫ দশমিক ২৯ মিটার রেকর্ড করা হয়েছে। এই পয়েন্টে পানি গত ২৪ ঘণ্টায় মাত্র ১ সেন্টিমিটার কমে বিপদসীমার ৪৯ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো: মাহবুবুর রহমান জানান, যমুনা নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। এখন পানি দ্রুত নেমে যাবে। এই মাসে আর এ পয়েন্টে পানি বাড়ার আশঙ্কা নেই। আর বড় ধরনের বন্যার আশঙ্কাও নেই।
ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো: আক্তারুজ্জামান জানিয়েছেন, ইতোমধ্যে জেলার ৫টি উপজেলায় ৩৪টি ইউনিয়নের পানিবন্দী মানুষদের মাঝে ১০৩ টন চাল, নগদ ৫ লক্ষ টাকা ও ৩০০ প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। এখনো ১২ শত টন চাল, নগদ ২০ লক্ষ টাকা ও ৭০০ প্যাকেট শুকনো খাবার মজুদ রয়েছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বাবুল কুমার সূত্রধর জানান, বন্যার পানিতে জেলার ৬ হাজার ৪৯৭ হেক্টর ফসলি জমি পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এসব জমির পাট, কলা, তিল, মরিচ ইত্যাতি এখন পানির নিচে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো: হারুন অর রশিদ জানান, সিরাজগঞ্জে বন্যা হওয়ায় ৮১টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পানি ঢুকেছে। এ সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদান বন্ধ আছে। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শিক্ষা ও আইসিটি রোজিনা আক্তার জানান, জেলার ১৬টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং ৮১টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বন্যার পানি উঠেছে। ফলে এসব প্রতিষ্ঠানে বন্ধ আছে পাঠদান।