বগুড়ার শেরপুরে উৎসবমুখর ও ভাবগাম্ভীর্যপূর্ণ পরিবেশে শেষ হলো জগন্নাথদেবের উল্টো রথযাত্রা মহোৎসব। শনিবার (৫ জুলাই) দুপুর ১টার দিকে রথযাত্রাটি শেরপুর পৌর শহরের গোসাঁইপাড়া গুন্ডিচা মন্দির থেকে কর্মকার পাড়া হয়ে কেন্দ্রীয় শ্রী শ্রী জগন্নাথ মন্দিরে শেষ হয়।
অন্যদিকে আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ (ইসকন) এর রথযাত্রাটি দক্ষিণ সাহাপাড়ার ষোলোআনা দুর্গামন্দির মন্দির থেকে বের হয়ে শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে উত্তর সাহাপাড়ার ইসকন মন্দিরে শেষ হয়।
এসময় ঢাক-ঢোল, কীর্তন ও জয়ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে পরে পুরো এলাকা। প্রভু জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রার পূণ্য রথে হাজারো ভক্তের উপস্থিতি ছিল চোখে পরার মতো।
এই যাত্রাপথে চলন্ত রথের দড়ি ছুঁয়ে জগন্নাথদেবের আশীর্বাদ নেন ভক্তরা। রথ থেকে বিতরণ করা হয় প্রসাদ। আর রথের সঙ্গে সঙ্গে ঢাক, ঢোল ও বাদ্যের তালে ভক্তরা নেচে গেয়ে কীর্তনে মাতেন ভক্তরা।

এর আগে, সকালে গোসাঁইপাড়া গুন্ডিচা মন্দিরে ও দক্ষিণ সাহাপাড়ার ষোলোআনা দুর্গামন্দিরে অনুষ্ঠিত হয় শ্রীচৈতন্য চরিতামৃত পাঠ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, পদাবলি কীর্তন, হরিনাম সংকীর্তন।
সনাতন ধর্মীয় বিশ্বাস অনুযায়ী, জগন্নাথ দেব জগতের ঈশ্বর। রথের দড়িতে টান দেওয়া মানেই পুণ্য অর্জন এই বিশ্বাস ধারণ করে বছরের পর বছর ধরে পালিত হয়ে আসছে এই রথযাত্রা।
উল্লেখ্য, প্রতি বছরের চন্দ্রপঞ্জিকার আষাঢ় মাসের শুক্লপক্ষের দ্বিতীয়া তিথিতে শ্রীশ্রী জগন্নাথদেবের রথযাত্রা শুরু হয়। এদিন দাদা ও বোনকে নিয়ে রথে চড়ে মাসির বাড়ি যান জগতের অধীশ্বর জগন্নাথ দেব। ৮ দিনব্যাপী এই মহোৎসবের পর একাদশী তিথিতে হয় প্রত্যাবর্তন যাত্রা, যাকে বলা হয় ‘উল্টো রথ’। অর্থাৎ, যেদিন রথটি টেনে জগন্নাথ মন্দির থেকে গুণ্ডিচা মন্দিরে নেওয়া হয়, ঠিক ৮দিন পর সেখান থেকেই রথ টেনে আবার ফিরিয়ে আনা হয় মূল স্থানে। এভাবেই সম্পন্ন হয় সনাতন ধর্মের অন্যতম বৃহৎ এই আচারিক উৎসব। গত ২৭ জুন শুরু হয়েছিল সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম রথযাত্রা উৎসব।
উৎসবকে ঘিরে পুলিশ প্রশাসন, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, সামাজিক নেতৃবৃন্দ স্বেচ্ছাসেবকগণসহ সকল ভক্তবৃন্দদের অন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়েছেন, সংশ্লিষ্টরা।
এ নিয়ে শেরপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) জয়নুল আবেদীন বলেন, উৎসবের এই আটদিন ছিল পুরো শহরজুড়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা। উৎসবের শেষ দিনে গতকাল সকাল থেকেই শহরের বিভিন্ন মোড়ে এবং রথের গাড়ির সাথে পুলিশ দলের টহল ছিল।