ভেজা চোখে হাজার মানুষের ভিড়ে স্ত্রীকে শেষবারের মতো বিদায় জানালেন বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী। দীর্ঘদিনের জীবনসঙ্গিনী নাসরিন সিদ্দিকীর মরদেহ যখন জানাজার জন্য মাঠে আনা হয়, তখন কান্না ধরে রাখতে পারেননি তিনি। সহধর্মিণীর স্মৃতিচারণ করতে গিয়েও কেঁপে উঠেছিল তার কণ্ঠ।
রোববার (৮ জুন) টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার ছাতিহাটি গ্রামে দ্বিতীয় জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয় নাসরিন সিদ্দিকীকে।
এর আগে, বাদ জোহরে প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয় টাঙ্গাইল শহরের পিটিআই স্কুল মাঠে। সেখানে দলমত নির্বিশেষে নানা শ্রেণিপেশার মানুষ অংশ নেন।
জানাজার আগে সকালে মরদেহবাহী অ্যাম্বুলেন্সটি টাঙ্গাইল শহরের বাসভবনের সামনে রাখা হয়। এ সময় রাজনৈতিক সহকর্মী, স্থানীয় বাসিন্দা ও আত্মীয়স্বজনরা তাকে এক নজর দেখার জন্য ছুটে আসেন।
পিটিআই মাঠে জানাজার আগে কয়েক মুহূর্তের বক্তব্যে কাদের সিদ্দিকী বলেন, “আমার স্ত্রী সবসময় আমার পাশে থেকেছেন। ওর জন্য সবাই দোয়া করবেন।” এরপরই তিনি আবেগতাড়িত হয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন।
নাসরিন সিদ্দিকীর জানাজায় উপস্থিত ছিলেন কাদের সিদ্দিকীর বড় ভাই ও সাবেক মন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকী, টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট ফরহাদ ইকবাল, জেলা জামায়াতের আমীর আহসান হাবীব মাসুদসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতারা।
জানা যায়, গত ২২ মে নাসরিন সিদ্দিকীর মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়। প্রথমে তাকে রাজধানীর নিউরো সায়েন্সেস হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরবর্তীতে স্কয়ার হাসপাতালের আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয় এবং ২৩ মে সেখানে তার মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচার হয়। সেদিন থেকেই তিনি অচেতন ছিলেন এবং লাইফ সাপোর্টে ছিলেন টানা কয়েকদিন। অবশেষে ৮ জুন শনিবার রাত ১১টার দিকে পৃথিবীর মায়া কাটিয়ে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান নাসরিন সিদ্দিকী। মৃত্যুর সময় তার পাশে স্বামী কাদের সিদ্দিকীসহ পরিবারের সদস্যরা ছিলেন।
একজন সংগ্রামী রাজনীতিবিদের জীবনসঙ্গিনী হিসেবে নাসরিন সিদ্দিকী নিঃশব্দে কেটে দিয়েছেন পুরো জীবন। তার এই বিদায়ে টাঙ্গাইলে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।