ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কলাবাগান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোক্তারুজ্জামান ও দুই উপ-পরিদর্শক (এসআই) বেলাল ও মান্নানকে দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে অর্থ আদায়, চাঁদাবাজি ও মামলা দিয়ে ফাঁসানোর হুমকির অভিযোগ উঠেছে।
তবে ডিএমপি বলছে, প্রশাসনিক কারণে তাঁদের প্রত্যাহার করা হয়েছে। সোমবার (০৫ মে) সকালে ডিএমপির মিডিয়া ও জনসংযোগ বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
অভিযোগকারী বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও ‘ফিকামলি তত্ত্বের’ প্রণেতা ড. আব্দুল ওয়াদুদের ভাষ্য, গত ২৯ এপ্রিল গভীর রাতে কলাবাগান থানার এসআই বেলালের নেতৃত্বে কয়েকজন পুলিশ সদস্য ও সাধারণ পোশাকে থাকা ১৫–২০ জন ব্যক্তি জোর করে তাঁর বাসায় ঢুকে পড়ে।
ড. ওয়াদুদের অভিযোগ, ওই সময় তাঁর ম্যানেজার ৯৯৯–এ ফোন করলে শাহবাগ ও নিউমার্কেট থানার টহল টিম ঘটনাস্থলে আসে। কলাবাগান থানার ওসি মোক্তারুজ্জামান সেই টহল টিমকে চলে যেতে বলেন। বাড়ির সিসি ক্যামেরার ফুটেজে এই দৃশ্য ধরা আছে বলে দাবি করেন তিনি।
অভিযোগ অনুযায়ী, পুলিশের উপস্থিতিতে তাঁর বাসার তৃতীয় তলার দরজা ভাঙার চেষ্টা করা হয়। একটি দরজা ভাঙার পর দ্বিতীয় দরজা ভাঙার সময় তিনি কলাবাগান থানার ওসিকে ফোনে জানান। ওসি তাঁকে বের হয়ে আসতে বলেন এবং জানান, ‘ডিবির লোক’ এসেছে।
ড. ওয়াদুদের ভাষ্য, দরজা খুলতেই এসআই বেলাল ও মান্নান তাঁকে ধাক্কা দিয়ে আবার ভেতরে নিয়ে যান এবং জানতে চান, তাঁর কাছে কী ধরনের অস্ত্র আছে। কিছুক্ষণ পর এসআই মান্নান তাঁকে একপাশে ডেকে নিয়ে বলেন, এই মুহূর্তে এক কোটি টাকা দিলে তাঁকে থানায় নিতে হবে না। তিনি টাকা না দিলে ১০টি মামলা দিয়ে ফাঁসানোর হুমকি দেওয়া হয়।
ড. ওয়াদুদ জানান, পরে তিনি তাৎক্ষণিকভাবে দুই লাখ টাকা এসআই বেলাল ও মান্নানকে দেন। বাকি টাকার জন্য ব্যাংকিং সময়ের মধ্যে ব্যবস্থা নেওয়ার শর্তে তিনজন সিভিল ড্রেসধারী ব্যক্তিকে তাঁর বাসায় রেখে যাওয়া হয়। তাঁরা নিজেদের ‘ডিবি পুলিশ’ হিসেবে পরিচয় দেন।
অভিযোগে আরও বলা হয়, যাওয়ার আগে পুলিশ সদস্যরা বাসায় কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি—এমন একটি বক্তব্য ভিডিও ধারণ করে তাঁর কাছ থেকে নেওয়া হয়।
ডিএমপির একটি সূত্র জানিয়েছে, অভিযোগটি আমলে নিয়ে ডিএমপি সদর দপ্তরের সিদ্ধান্তে অভিযুক্ত তিন কর্মকর্তাকে শুধু প্রত্যাহারই নয়, সাময়িকভাবে বরখাস্তও করা হয়েছে। তবে এই বরখাস্তের বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা পাওয়া যায়নি।
ডিএমপি উপ-কমিশনার (ডিসি) তালেবুর রহমান বলেন, “প্রশাসনিক কারণে তাঁদের প্রত্যাহার করা হয়েছে। অভিযোগ তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”