বগুড়ার নন্দীগ্রামে হাটকড়ই মহাশ্মশানের কালীমাতা মন্দিরে প্রতিমা ভাঙচুরের অভিযোগে মো: ফয়সাল করিম রেজা (৩৫) নামে এক মানসিক ভারসাম্যহীন যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায় ও মুসলমান জনতা একত্রিক হয়ে ওই যুবককে আটকের পর থানা পুলিশকে হস্তান্তর করেছে। গ্রেপ্তার যুবক ফয়সাল করিম রেজা নন্দীগ্রাম উপজেলার হাটকড়ই স্কুলপাড়া এলাকার মো: খোরশেদ আলম টুকুর ছেলে।
মঙ্গলবার (০৯ এপ্রিল) সকালে উপজেলার ভাটগ্রাম ইউনিয়নের হাটকড়ই সার্বজনীন মহাশ্মশান এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে। মহাশ্মশানের কালীমাতা মন্দিরের মেঝেতে প্রতিমা উপুর হয়ে ভাঙা অবস্থায় পড়ে ছিলো। এমন খবর পেয়ে মহাশ্মশানে ভিড় করেন মুসলিম এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের শত শত মানুষ। সব ধর্মের মানুষ একত্রিত হয়ে দোষী ব্যক্তির শাস্তির দাবিতে ভীষণ উত্তেজিত হন।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পদোন্নতিপ্রাপ্ত এসপি) মো: আব্দুর রশিদ, সহকারী পুলিশ সুপার মো: ওমর আলী, নন্দীগ্রাম থানার ওসি মো: আজমগীর হোসাইন আজম, ওসি (তদন্ত) মো: জামিরুল ইসলাম। পুলিশ কর্মকর্তারা দোষী ব্যক্তির বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে উত্তেজিত জনতা শান্ত হয়।
যুবক ফয়সাল করিম রেজাকে গ্রেপ্তারের পর পুলিশ হেফাজতে তাকে বগুড়া হাসপাতালে নেওয়া হয়। সে হাসপাতালের পিলার চেপে ধরে চুমু খাচ্ছিল। তার চোখে পানি, কান্না ও পাগল আচরণ দেখে হাসপাতালের রোগীরাও ছিলেন আবেগাপ্লুত।
গ্রেপ্তার যুবকের পরিবার দাবি করেন, ফয়সাল করিম রেজা গত ২ বছর ধরে মানসিক ভারসাম্যহীন। তিনি এক সময় সিরাজগঞ্জ জেলার বেলকুচি থানার একটি মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করতেন। মানসিক সমস্যা হওয়ায় ফয়সাল করিমক বর্তমানে বাড়িতেই থাকে। সে অপরাধ করলে আইন অনুযায়ী তার বিচার হোক। সে পাগল, তার শাস্তিটা যেন কম হয়।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন হাটকড়ই মহাশশ্মানের ভিতরে কালীমাতা মন্দিরে সোমবার (০৮ এপ্রিল) রাতে পূজা অর্চনা শেষে দরজা ও বাহিরের গেট তালা বন্ধ করে সবাই চলে যায়। সেই রাতে শিবশক্তি মন্দিরের গ্রীল ঘর ভাঙার চেষ্টা করা হয়। এরপর হাটকড়ই মহাশশ্মানের কালিমাতা মন্দিরে হামলা করা হয়।
বগুড়ার নন্দীগ্রামে কালীমাতা মন্দিরে প্রতিমা ভাঙচুরের বিষয়ে নন্দীগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: আজমগীর হোসাইন আজম জানান, উপজেলার হাটকড়ই এলাকায় কাছাকাছি মসজিদ, মন্দির এবং মহাশ্মশান। সকল ধর্মের শান্তিপূর্ণ সেতুবন্ধন। মন্দিরে হামলা ও প্রতিমা ভাঙচুরের মামলায় একজনকে আটক করে কোর্ট হাজতে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় অন্যকেউ জড়িত থাকলে তাকেও আইনের আওতায় আনা হবে।