বগুড়ার শেরপুরে স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতাকে মারধরের ঘটনায় যুবলীগ নেতা মাহফুজুর রহমান মনির সহ ৫ জনকে আটক করেছে পুলিশ। মারধরের ঘটনায় আহত স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতার নাম সোহেল মাহমুদ। তিনি শেরপুর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। ঘটনার পরেই পৌর যুবলীগের সহ-সভাপতি মাহফুজুর রহমান মনির (৩৮), তার ছোটভাই ফাহাদ হোসেন (২২), গোলাম মোস্তফা (২৫), মো: সেলিম (২৫) ও মো: শহিদুল (২৮) কে আটক করে পুলিশ।
মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারী) শেরপুর পৌর শহরের উত্তর সাহা পাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার রাতেই আহত সোহেল মাহমুদের বোন শাম্মি আক্তার রিনা (৩৮) বাদী হয়ে শেরপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় ৮ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ১০/১৫ জন কে আসামী করা হয়েছে।
মামলা সুত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন যাবৎ মাহফুজুর রহমান মনিরের সাথে সোহেল মাহমুদ শেয়ারে রাইস ব্র্যানের ব্যবসা করে আসছিলো। ব্যবসা পরিচালনার এক পর্যায়ে সোহেল মাহমুদের কাছ থেকে ৫ লক্ষ টাকা নিয়ে তা ফেরৎ দিতে তালবাহানা করে মনির। এর এক পর্যায়ে মঙ্গলবার বেলা ১১ টায় শেরপুর বাস্ট্যান্ডে একটি হোটেলের সামনে লেনদেন সম্পর্কে আলোচনার উদ্দেশ্যে সোহেল মহমুদকে ডাক দিয়ে আতর্কিতভাবে হামলা করে মারধর করে। এ সময় সোহেল মাহমুদ সেখান থেকে পালিয়ে পৌর শিশু পার্কে আসে। এর কিছুক্ষণ পর মনির দলবদ্ধভাবে পুনরায় পৌর শিশুপার্কে সোহেল মাহমুদের ওপর হামলা করে। পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে ধাওয়া করে মনিরের অফিস সংলগ্নে সোহেল মাহমুদকে ধরে লোহার রড ও বাশেঁর লাঠি দিয়ে পেটাতে থাকে। এসময় তার ভাগ্নে রাব্বি এগিয়ে এলে তার মাথায় ছুড়িকাঘাত করা হয়। খবর পেয়ে এলাকার লোকজন ছুটে এসে আহত সোহেল ও রাব্বিকে উদ্ধার করে শেরপুর উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে নিয়ে যায়।
শেরপুর উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে আহত সোহেল মাহমুদ | ছবি : সংগৃহীত।
এসময় মনিরের অফিস ঘেরাও করে রাখেন এলাকাবাসী। পরে পুলিশ মনিরসহ পাঁচজনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। এদিকে সোহেল ও রাব্বির অবস্থার অবনতী হলে তাদেরকে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। তারা এখনও আশংকামুক্ত নয় বলে জানিয়েছেন রিনা।
বগুড়ার শেরপুরে স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতাকে মারধরের ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানিয়েছেন শেরপুর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাধারণ সম্পাদক নূরে আলম সানি।
বক্তব্য জানতে শেরপুর উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মো: তরিকুল ইসলাম তারেকের মোবাইল ফোনে কল দিলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।
এবিষয়ে শেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রেজাউল করিম জানান, ঘটনার রাতে আসামী মনিরের অফিস তল্লাশী করে একটি হাতুরি, একটি এসএস পাইপ ও দুইটি হাসুয়া উদ্ধার করা হয়েছে। আটককৃত ৫ জন আসামীকে বুধবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে এবং বাকিদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যহত রয়েছে বলে জানান তিনি।