চট্টগ্রামের আলোচিত কুখ্যাত সন্ত্রাসী সাজ্জাদ যখন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে, ঠিক তখনই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছেন তার স্ত্রী তামান্না শারমিন। আলোচনার কারণ—হাইকোর্টে ‘সিরিয়াল ভাঙা’র এক নাটকীয় ঘটনার মাধ্যমে তিনি আগাম জামিন পেয়েছেন ৩১৩ জনকে পেছনে ফেলে!
বুধবার (৯ এপ্রিল) বিচারপতি মো. মাহবুব উল আলম ও বিচারপতি মো. হামিদুর রহমানের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ ৫৪৭টি আগাম জামিন আবেদনের শুনানিতে ছিলেন। তবে শুনানি শেষ হয় মাত্র ৬৩টি মামলার। আর ঠিক সেখানেই ঘটে নাটকীয় এক মোড়।
সাধারণত সিরিয়াল অনুসারে শুনানি হয়। সেই হিসেবে ৪৬৩ নম্বরে থাকা তামান্না শারমিনের আবেদন পৌঁছার কথা ছিল না ওই দিনের শুনানিতে। কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে ১৫০ নম্বরের পরেই হঠাৎ তার মামলার শুনানি শুরু হয়—মাত্র ১ মিনিটেই সিদ্ধান্ত, জামিন মঞ্জুর!
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম আলজাজিরার অনুসন্ধানী সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের বিষয়টি নিয়ে নিজের ফেসবুক পোস্টে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। তিনি জানান, “তামান্না শারমিন কিছুদিন আগেই প্রকাশ্যে আদালত ও জামিন কিনে নেওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন। আর আজ সেই কথাই যেন বাস্তব রূপ পেল হাইকোর্টে।”
সাংবাদিক জুলকারনাইন তার পোস্টে হাইকোর্টের ওয়েবসাইটের লিংকসহ বিস্তারিত তুলে ধরেন, যা থেকে তার দাবির সত্যতাও মিলেছে।
আইনের চোখে সবাই সমান—এই আদর্শ যখন এমন ‘সিরিয়াল জাম্প’ দেখে প্রশ্নের মুখে পড়ে, তখন স্বাভাবিকভাবেই জনমনে সন্দেহ দানা বাঁধে। আদালতের এমন আচরণকে ঘিরে উঠছে প্রশ্ন—তবে কি অর্থ ও প্রভাবই বিচার ব্যবস্থায় অগ্রাধিকার পাচ্ছে?
জুলকারনাইন তার পোস্টে আরও উল্লেখ করেন, “আজকের দিনটি ছিল ২০ এপ্রিলের আগে কোর্টের শেষ কার্যদিবস। অথচ মাত্র ৬৩টি মামলার শুনানি হলো, যার মধ্যে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাও অন্তর্ভুক্ত আছেন। তাহলে বাকি ৪৮৪টি মামলার কি হবে?”
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ইতোমধ্যেই এই ঘটনা ঘিরে তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। অনেকে বলছেন, সাধারণ নাগরিকদের জন্য জামিন পাওয়া যেখানে কঠিন, সেখানে তামান্নার ‘ত্বরিত জামিন’ আমাদের বিচারব্যবস্থার স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে।