ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে যখন উত্তেজনার পারদ চরমে, ঠিক তখনই ইসলামাবাদ ‘আব্দালি উইপন সিস্টেম’ নামের একটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের সফল পরীক্ষা চালিয়েছে। এই ক্ষেপণাস্ত্রের পাল্লা ৪৫০ কিলোমিটার।
শনিবার (৩ মে) পাকিস্তানের সামরিক জনসংযোগ বিভাগ আইএসপিআর এক বিবৃতিতে জানায়, ‘সিন্ধু মহড়া’র অংশ হিসেবে এই উৎক্ষেপণ পরিচালিত হয়েছে। এতে সেনাবাহিনীর পরিচালনাগত সক্ষমতা, উন্নত নেভিগেশন প্রযুক্তি এবং কৌশলগত প্রস্তুতি যাচাই করা হয়েছে।
সামরিক প্রস্তুতির এই প্রদর্শনী এমন এক সময়ে এসেছে, যখন ভারতের জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগাম অঞ্চলে সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পর দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক আরও অবনতির দিকে যাচ্ছে। হামলার দায় সরাসরি পাকিস্তানের দিকেই ইঙ্গিত করছে দিল্লি, যদিও এখনো প্রমাণ উপস্থাপন করা হয়নি।
পাকিস্তান প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ এই অভিযোগ জোরালোভাবে প্রত্যাখ্যান করে ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন।
এদিকে পাকিস্তান অভিযোগ করেছে, ভারত নিয়মিত যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করছে, যা সীমান্ত অঞ্চলে নতুন করে অস্থিরতা সৃষ্টি করছে। এমন পরিস্থিতিতে ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণকে প্রতিরক্ষামূলক সক্ষমতা প্রদর্শনের বার্তা হিসেবে দেখছে বিশ্লেষকরা।
সফল উৎক্ষেপণের পর পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি, প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ, তিন বাহিনীর প্রধান এবং জয়েন্ট চিফ অব স্টাফ কমিটির চেয়ারম্যান জেনারেল সাহির শামশাদ মির্জা সংশ্লিষ্ট সেনাসদস্য, বিজ্ঞানী ও প্রকৌশলীদের অভিনন্দন জানান।
এর আগে পেহেলগাম হামলার জেরে ভারত একতরফাভাবে বিশ্বব্যাংকের মধ্যস্থতায় স্বাক্ষরিত ঐতিহাসিক সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত করে এবং পরদিন পাকিস্তান পাল্টা হুঁশিয়ারি দিয়ে ১৯৭২ সালের সিমলা চুক্তি স্থগিতের হুমকি দেয়। এমনকি ভারতের জন্য আকাশসীমাও বন্ধ করে দেয় ইসলামাবাদ।
বিশ্লেষকদের মতে, সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহ দক্ষিণ এশিয়ার স্থিতিশীলতাকে নতুন করে হুমকির মুখে ফেলেছে। ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা সেই উত্তেজনাকেই যেন আরও এক ধাপ বাড়িয়ে দিল।