চরম খরা আর অর্থনৈতিক চাপের মুখে এই বছর ঈদুল আজহায় পশু কোরবানি না করতে নাগরিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে মরক্কোর সরকার। দেশটির রাজা ষষ্ঠ মোহাম্মদ নিজেই এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে ঘোষণা দিয়েছেন, তিনি জনগণের পক্ষ থেকে কোরবানি সম্পন্ন করবেন।
সম্প্রতি যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট আইয়ের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, মরক্কোর ইসলামিক বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের এক চিঠির মাধ্যমে এ ঘোষণা আসে। এতে বলা হয়, চলমান খরা ও পশু সংকট মোকাবিলায় এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
সরকারি সূত্র বলছে, দীর্ঘদিন ধরে চলা চরম খরা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগে দেশটির পশুসম্পদ বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। পশুর সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে কমে যাওয়ায় কৃষিখাতও হুমকির মুখে। অবশিষ্ট গবাদিপশু রক্ষায় পরিবারগুলোকে এবারে পশু জবাই থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।
স্থানীয় এক বাসিন্দা আহমেদ জানান, ‘আমার পরিবার এবারের ঈদ নিরবেই পালন করবে। ছবি বা কোনো আয়োজন সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করবো না।’
অর্থনীতিবিদ জাদ্রি মনে করেন, মরক্কোর এই সিদ্ধান্ত শুধু খরা নয়, আঞ্চলিক বৈষম্য এবং সম্পদের অসম বণ্টনের বাস্তব চিত্রও তুলে ধরে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ধরনের সিদ্ধান্ত মরক্কোতে বিরল। সর্বশেষ এমন সিদ্ধান্ত এসেছিল ষাট ও সত্তরের দশকে, মরক্কোর প্রয়াত রাজা বাদশাহ হাসানের শাসনামলে। তিনি যুদ্ধ ও দুর্যোগের সময় কোরবানি বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছিলেন।
রাজা মোহাম্মদের এমন উদ্যোগকে অনেকে গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক বার্তা বলেও দেখছেন। তারা বলছেন, ধর্মীয় আচার পালন যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি সময় ও বাস্তবতাকেও বুঝে সিদ্ধান্ত নিতে হয়।