দক্ষিণ কোরিয়ায় ভয়াবহ দাবানলে অন্তত ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং আহত হয়েছেন আরও ২০ জন।
দেশটির দক্ষিণপূর্বাঞ্চলের অন্তত পাঁচটি এলাকায় দাবানল ছড়িয়ে পড়েছে, যার ফলে ২৭ হাজারেরও বেশি বাসিন্দাকে ঘরবাড়ি ছেড়ে পালাতে বাধ্য হতে হয়েছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে কয়েক হাজার দমকলকর্মী মোতায়েন করা হয়েছে।
শুষ্ক আবহাওয়া এবং প্রবল বাতাসের ফলে দাবানল দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। ইতোমধ্যে স্কুল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে এবং কারাগার থেকে বন্দিদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়ার ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হান ডাক সু জানিয়েছেন, ‘সর্বকালের ভয়াবহতম এই দাবানল মোকাবেলায় সরকার সম্ভাব্য সব ব্যবস্থা নিয়েছে, কিন্তু পরিস্থিতি এখনো সংকটপূর্ণ।’
দক্ষিণ কোরিয়ায় অবস্থানরত মার্কিন সামরিক বাহিনীও আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টায় সহযোগিতা করছে। দেশটির নিরাপত্তা মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, উইসেয়ং কাউন্টিতে দাবানলে ১৪ জন এবং সানছং কাউন্টিতে আরও ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের বেশিরভাগের বয়স ৬০ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে।
দেশটির বন বিভাগের মুখপাত্র কিম জং-গুন জানিয়েছেন, পর্যাপ্ত সরঞ্জাম ও হেলিকপ্টার না থাকার সমালোচনার মুখে সরকার আরও অগ্নিনির্বাপণ হেলিকপ্টার আনার পরিকল্পনা করছে। ইতোমধ্যে ৪,৯১৯ জন দমকলকর্মী, কয়েকশ পুলিশ কর্মকর্তা এবং সামরিক বাহিনীর ইউনিট দাবানল নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। ৮৭টি হেলিকপ্টার এই কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে।
দাবানলের কারণে ইউনেস্কো ঘোষিত বেশ কয়েকটি বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা হুমকির মুখে পড়েছে। এনদং শহরের হাও গ্রাম এবং বায়ুংসান কনফুসিয়ান একাডেমির সুরক্ষায় অগ্নিনিরোধী রাসায়নিক স্প্রে করা হয়েছে। ইতোমধ্যে ৬৮১ সালে নির্মিত গুন মন্দির দাবানলে পুড়ে গেছে।
সরকার ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোকে ‘বিশেষ দুর্যোগপূর্ণ এলাকা’ ঘোষণা করেছে। এখন পর্যন্ত দাবানলে প্রায় ৩৭ হাজার ৬৫ একর এলাকা পুড়ে গেছে।
এ ভয়াবহ আগুনের ক্ষতি কমাতে সরকার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, তবে পরিস্থিতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনতে আরও সময় লাগতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।