বিয়ের ১২ দিন পর স্বামী জানতে পারেন তার স্ত্রী আসলে একজন পুরুষ। এমনই এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ ইন্দোনেশিয়ায়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একে-অপরের সঙ্গে পরিচয় হয়। ধীরে ধীরে পরিচয় পরিণত হয় প্রেমের সম্পর্কে। এরপর ১ বছরের প্রেমের সম্পর্কের পর অবশেষে তাদের বিয়ে হয়। এবার বুঝি শুরু হলো তাদের সুখের দিন। কিন্তু কোথায় সেই সুখ?
বিয়ের ১২ দিন পর স্বামী জানায়, তার স্ত্রী আসলে একজন পুরুষ। এই ঘটনায় পুলিশে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী ওই স্বামী। আটক করা হয়েছে তার স্ত্রী রূপী যুবককেও। সোমবার (২৭ মে) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানায় হংকং ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ‘সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট’।
প্রতিবেদনে জানানো হয়, ইন্দোনেশিয়ান এক ব্যক্তি সম্প্রতি বিয়ে করেছেন এবং বিয়ের পরই নিজের জীবনের সবচেয়ে বড় ধাক্কা খেয়েছেন। ‘সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট’ অনুসারে, প্রেম করে বিয়ে করলেও এর ১২ দিনের মাথায় ২৬ বছর বয়সী ওই স্বামী জানতে পারেন, তার স্ত্রী আদিন্দা কানজা আসলে একজন পুরুষ।
‘সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট’ জানায়, ভুক্তভোগী ওই স্বামীর নাম ‘একে’ (ছদ্মনাম)। একে ইন্দোনেশিয়ার জাভা দ্বীপের নারিঙ্গুল এলাকার বাসিন্দা। ২০২৩ সালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ২৬ বছর বয়সী আদিন্দা কানজার সঙ্গে তার পরিচয় হয়। পরবর্তীতে তারা দু’জনেই সামনা-সামনি দেখা করার পরিকল্পনা করেন।
এর প্রায় ১ বছর পর তারা দু’জনেই তাদের বিয়ের পরিকল্পনা করেন। তবে কানজা সে সময় জানায়, তাদের বিয়েতে কেউ থাকতে পারবে না, কারণ বিয়েতে যোগ দেওয়ার জন্য তার পরিবারের কোনো সদস্য নেই। এরপর গত শুক্রবার (১২ এপ্রিল) একে-এর বাড়িতে বিয়ে করেন তারা।
যাইহোক, বিয়ে হওয়ার পর আদিন্দা ক্রমাগত তার স্বামী একে’র কাছ থেকে নিজের মুখ লুকিয়ে রাখতে থাকে এবং গ্রামে স্বামীর পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে মেলামেশা করতে অস্বীকার করেন। এমনকি ঋতুচক্রের মতো মাসিক অসুস্থতার কারণসহ বিভিন্ন রকম অজুহাত দেখিয়ে স্বামীর সাথে ঘনিষ্ঠতা এড়ানোর চেষ্টাও করতে থাকেন তিনি।
দিনের পর দিন নববিবাহিতা স্ত্রীর আচরণ দেখে সন্দেহজনক মনে হলে একে তার স্ত্রীর ব্যাপারে খোঁজ-খবর নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। খোঁজ নিয়ে একে জানতে পারেন, আদিন্দার মা-বাবা এখনো জীবিত রয়েছেন এবং তারা তাদের সন্তানের বিয়ের ব্যাপারে কিছুই জানেন না।
ভুক্তভোগী স্বামী একে আরো আশ্চর্য হয় যখন সে জানতে পারে, তার বিয়ে করা স্ত্রী আদিন্দা আসলে একজন পুরুষ এবং তার প্রকৃত নাম ‘ইএসএইচ’, যিনি ২০২০ সাল থেকে নারীদের মতো সাঁজগোজ ও পোশাক পরে থাকেন।
পুলিশের তদন্তের সময় জিজ্ঞাসাবাদে ‘ইএসএইচ’ নামের ওই যুবক জানায়, সে তার ‘স্বামীর’ পরিবারের সম্পত্তি হাতানোর জন্য এই বিয়ে করেছে। পুলিশ তাকে আটক করেছে। পুলিশ তার কণ্ঠস্বরকে ‘নারীর মতো’ বলে বর্ণনা করেছে।
পুলিশ জানায়, স্থানীয় আইনের অধীনে আদিন্দা প্রতারণার অভিযোগের মুখোমুখি হয়েছে এবং এই অভিযোগে তার ৪ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে।