ইরাকের সংসদে মেয়েদের বিয়ের বয়স ৯ বছরে নামিয়ে আনতে প্রস্তাব করা হয়েছে। এর জেরে দেশটিতে আলোচনা সমালোচনা শুরু হয়েছে। ইরাকের জাস্টিস মন্ত্রণালয় থেকে এই প্রস্তাব করা হয়। খবর এনডিটিভি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরাকে বিদ্যমান আইনে মেয়েদের নূন্যতম বিয়ের বয়স ১৮ বছর। দেশটির পার্লামেন্ট নতুন উত্থাপিত বিলে বলা হয়েছে, ধর্মীয় নেতা ও বেসামরিক বিচার সংশ্লিষ্টরা চাইলেই দেশটির যে কোনো পারিবারিক বিষয়ে নাক গলাতে পারবে।
এই বিলে ছেলেদের নূন্যতম বিয়ের বয়স ১৫ ও মেয়েদের নূন্যতম বিয়ের বয়স ৯ বছর করার প্রস্তাব করা হয়েছে। দেশটির সমালোচকদের ধারণা, নতুন এই বিল পাস হলে দেশে ডিভোর্স, উত্তরাধিকারজনিত সমস্যা বেড়ে যেতে পারে। একইসঙ্গে দেশটিতে নারীদের অধিকার সংরক্ষিত হবে না এবং লিঙ্গ বৈষম্য তৈরি হবে।
গত মাসের শেষ দিকে ইরাকের পার্লামেন্টে এই বিল প্রস্তাব করলে সংসদের আইনপ্রণেতাদের তোপের মুখে তা বাতিল করা হয়। তবে রবিবার (৪ আগস্ট) শিয়া গোষ্ঠীর সমর্থন নিয়ে এই বিল আবারো প্রস্তাব করা হয়।
ইরাকের মানবাধিকার সংস্থা, নারী অধিকার ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা এই বিলের তীব্র বিরোধিতা করেন। তারা দাবি জানায়, এই বিল পাস হলে দেশের মেয়েদের পড়ালেখা ও স্বাস্থ্য ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বাল্যবিবাহ পড়ালেখায় বিঘ্ন ঘটায় এবং অল্প বয়সে গর্ভধারণ পরিবারের অশান্তিরও কারণ-বলে সতর্ক করেন তারা।
এদিকে ইউনিসেফ জানায়, ইরাকের ২৮ শতাংশ নরাীরা ১৮ বছরের আগেই বিয়ে করেছেন। এই আইন পাস হলে দেশটি অগ্রসর হবে না বলে মন্তব্য করেছেন হিউম্যান রাইটস ওয়াচের গবেষক সারাহ সানবার।
তিনি জানান, দেশের ধর্মীয় নেতাদের বিয়ের বিষয়ে অধিকার দেওয়া হলে সেটি নারী পুরুষের সমতাভিত্তিক ইরাকি আইনে অবৈধ হবে। আর এই আইন পাস হলে মেয়েদের ভবিষ্যৎ তাদের কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া হবে এবং দেশের নারী উন্নয়ন বাঁধাগ্রস্ত হবে। কিশোরী মেয়েরা বিয়ের সাজে নয়, খেলার মাঠে ও স্কুলে থাকার অধিকার রাখে বলেও দাবি করেন তিনি।
ইরাকের আইন মন্ত্রণালয় জয়ানিয়েছে, এই বিলটির মূল উদ্দেশ্য দেশে ইসলামিক আইনকে মানদণ্ড হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা ও ছেলে মেয়েদের অনৈতিক সম্পর্কে জড়ানো থেকে রক্ষা করা। তবে এই বিলটির বিরোধীদের দাবি, এটি একটি ভিত্তিহীন যুক্তি ও বাল্যবিবাহের গুরুতর সমস্যাগুলোকে এই আইন থেকে এড়িয়ে যাওয়া হচ্ছে।