ভারতের মিরাটে স্বামীকে (সৌরভ রাজপুত) নির্মমভাবে হত্যার পর প্রেমিক সাহিল শুক্লার সঙ্গে একসঙ্গে কারাগারে থাকার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন মুসকান রাস্তোগি। তবে জেল কর্তৃপক্ষ তাদের এ দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে।
জেল সূত্রে জানা গেছে, সাহিল শুক্লাকে অস্থির দেখাচ্ছে। তিনি ঘুমের অভাবে ক্লান্ত এবং মেজাজ খিটখিটে হয়ে উঠেছেন। ধারণা করা হচ্ছে, তিনি মাদকাসক্ত।
অন্যদিকে, মুসকান ও সাহিল কারাগারের অন্যান্য বন্দিদের সঙ্গে কথা বলছেন না। প্রথম দিন মুসকান কিছুই খাননি, তবে এরপর থেকে নিয়মিত খাবার খাচ্ছেন। তারা দু’জন বর্তমানে বিচারবিভাগীয় হেফাজতে রয়েছেন।
মিরাট পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাদের রিমান্ডের আবেদন করা হবে।
পুলিশি তদন্তে বেরিয়ে এসেছে লোমহর্ষক তথ্য। গত ৪ মার্চ মুসকান তার স্বামী সৌরভকে প্রথমে মাদক প্রয়োগ করেন। এরপর নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা করেন। পরে সৌরভের মরদেহ ১৫ টুকরো করে প্লাস্টিকের ড্রামে ভরে সিমেন্ট দিয়ে মুখ বন্ধ করে দেন। হত্যার পর তারা হিমাচল প্রদেশ ত্যাগ করেন।
ঘটনাটিকে ধামাচাপা দিতে, তারা সৌরভের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করেন, যেন মনে হয় তিনি জীবিত আছেন। পরে মুসকান তার পরিবারের কাছে স্বীকার করেন যে, সাহিল ও তিনি (মুসকান) মিলে সৌরভকে হত্যা করেছেন। অথচ এক সময় সৌরভ ও মুসকান প্রেমের সম্পর্কের মাধ্যমে ঘর বেঁধেছিলেন।
২০১৬ সালে ভালোবেসে বিয়ে করেছিলেন সৌরভ ও মুসকান। তাদের ছয় বছরের একটি কন্যাসন্তানও রয়েছে। তবে বিয়ের পর থেকেই সৌরভের পরিবারের সঙ্গে মুসকানের সম্পর্ক তিক্ত হয়ে ওঠে। এ কারণে সৌরভ স্ত্রীকে নিয়ে আলাদা বাসায় ওঠেন।
২০১৯ সালে সৌরভ জানতে পারেন, তার ঘনিষ্ঠ এক বন্ধুর সঙ্গে মুসকানের পরকীয়া সম্পর্ক রয়েছে। তিনি বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নিলেও মেয়ের ভবিষ্যতের কথা ভেবে তা থেকে সরে আসেন। সৌরভ ভারতীয় নৌবাহিনীর সাবেক কর্মকর্তা ছিলেন। স্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েনের পর তিনি লন্ডনে কর্মরত ছিলেন। তবে গত মাসে মেয়ের জন্মদিন উপলক্ষে দেশে ফিরেছিলেন এবং তখনই নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হন।
এই চাঞ্চল্যকর হত্যাকাণ্ড ভারতজুড়ে আলোড়ন তুলেছে। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তদন্তের মাধ্যমে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে আসতে পারে।