বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গণহত্যা ও গুলি বর্ষণের ঘটনার বিচার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এসব ঘটনার তদন্ত জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে করার প্রচেষ্টা নেওয়া হয়েছে। বুধবার (১৪ আগস্ট) সকালে সচিবালয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথ বলেন আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।
তিনি বলেন, গত (০১ জুলাই) থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত আন্দোলনে ছাত্র-জনতা হত্যাকাণ্ডের ঘটনাগুলোর বিচার আন্তর্জাতিক আদালতে করা হবে। এছাড়া ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে একই সময়ে ঢাকায় মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলাগুলো বৃহস্পতিবার ১৫ই আগস্টের মধ্যে প্রত্যাহার করা হবে। আর বাকি মামলাগুলো আগামী ৩১ আগস্টের মধ্যে প্রত্যাহার করা হবে বলেও জানান তিনি।
উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলেন ‘গণহত্যা ও গুলি বর্ষণের ঘটনায় বিচারের জন্য ইতোমধ্যে কিছু মামলা করা হয়েছে। আন্দোলনে রাজপথে থাকা মানবাধিকার সংগঠন, বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন ও দেশের সাধারণ জনগণ দাবি করেছেন, যে এটাকে কী মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে বিচার করার কোনও সুযোগ আছে কি না। আমরা সেটা খতিয়ে দেখেছি।
তিনি বলেন, ১৯৭৩ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন আছে, সেটা পরে ২০০৯ ও ২০১৩ সালে সংশোধন করা হয়েছে। সেই আইনে আমরা জুলাই গণহত্যা ও আগস্টের প্রথম ৫ দিনের গণহত্যাও বোঝাচ্ছি। এর জন্য দায়ী ব্যক্তিদের আন্তর্জাতিক আদালতে বিচারের জন্য ইতোমধ্যে তদন্ত করে আমরা দেখেছি, এই আইনের অধীনে হত্যাকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তি ও যারা নির্দেশ দিয়েছেন এবং যারা বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করেছেন, সকলকে বিচারের আওতায় আনা সম্ভব।
তিনি আরও বলেন, আন্তর্জাতিক আদালতের ইনভেস্টিগেশন টিম আছে ও প্রসিকিউশন টিম আছে। আগে এগুলোকে আমরা রিঅর্গানাইজড করার চেষ্টা করছি, আদালতটা আমরা একটু পরে করব। ইনভেস্টিগেশন জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে করার চেষ্টা করছি আমরা। জাতিসংঘ থেকে বারবার আমাদের সহযোগিতার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। আদালতে বিচারের সত্যিকারের স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করার জন্য জাতিসংঘের সর্বাত্মক তত্ত্বাবধানে আমাদের তদন্ত টিম কাজ করবে। সেটার লক্ষ্যে সব উদ্যোগ গ্রহণ করব আমরা।