আবু সাঈদ হত্যা মামলায় কারাগারে থাকা রংপুর পুলিশ লাইন্স স্কুল এন্ড কলেজের ছাত্র আলফি শাহরিয়ার মাহিমের জামিন মঞ্জুর করেছে আদালত। বৃহস্পতিবার (০১ আগস্ট) দুপুরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল আদালত-১ এর বিচারক মো: মোস্তফা কামাল এই রায় ঘোষণা করেন।
আদালতের পিপি মো: রফিক হাসনাইন বলেন, নথিপত্র অনুযায়ী কলেজ শিক্ষার্থী মাহিমের বয়স ১৬ বছর ১০ মাস হওয়ায় এবং এই অপরাধের সঙ্গে জড়িত না থাকার তথ্য প্রমাণ পাওয়ায় তাকে তাকে জামিন দিয়েছে আদালত। সব প্রসিডিউর শেষে আজই তাকে মুক্তি দেয়া হবে বলেও জানান তিনি।
আসামী পক্ষের আইনজীবি জোবাইদুল হক বলেন, মিথ্যা মামলায় ১৬ বছর বয়সী কলেজ ছাত্র মহিমকে পুলিশ উদ্দেশ্য প্রণোদিত ভাবে তার বয়স ১৯ বছর দেখিয়ে আদালতে তুলেছিল। পরে আদালতের বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন।
পরে সঠিক প্রমাণ দিয়ে মেট্রোপলিটন কোতয়ালী আদালত থেকে মামলাটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতে নিয়ে আসি আমরা। সেকাজটুকু করতে গিয়ে আমরা অনেক ধকল সামলিয়েচি। আদালত আগামী (৪ আগস্ট) শুনানীর দিন ধার্য করে। বিষয়টি গণমাধ্যমে আসলে পুলিশের সহায়তায় পুট আপ দিয়ে আজই আমরা শুনানী করি। বিজ্ঞ আদালতের বিচারক মাহিমকে জামিন দিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, এ ঘটনায় পুলিশ মোটেও দায়িত্বশীলতার পরিচয় দেয়নি। একটি কিশোরকে আটক করে তার অধিক বয়স লিখে কারাগারে পাঠানোটা বেআইনি ছিলো। এজন্য সংশ্লিষ্ট পুলিশের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহন প্রয়োজন।
গত (১৯ জুলাই) রংপুর পুলিশ লাইন্স স্কুল এন্ড কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র আলফি শাহরিয়ার মাহিমকে (১৬ বছর ১০ মাস) আবু সাঈদ হত্যা মামলায় গ্রেফতার হয়ে মাহিম কারাগারে বন্দি অবস্থায় আছেন। শহারিয়ার মাহিম রংপুর পুলিশ লাইন্স স্কুল এন্ড কলেজের একাদশ (এইচএসসি ২৫) এর শিক্ষর্থী। তার কলেজ আইডি নম্বর (১৭৬৬০)। সে সিদ্দিক মেমোরিয়াল স্কুল এন্ড কলেজের প্রাক্তন ছাত্র ছিল।
এ ব্যপারে রংপুর মহানগরের পুলিশ কমিশনার মনিরুজ্জামান বলেন, গত ১৮ জুলাই থানায় হামলা ভাংচুর ও লুটপাট করা হয়। তখন আইনশৃঙখলাবাহিনীর কাছে জিন্সের প্যান্ট ও স্যান্ডো গেঞ্জি পড়া অবস্থায় মাহিমকে আটক হয়। পরে তাকে পুলিশের হেফাজতে রাখা হয়। যেহেতু ১৮ এবং ১৯ জুলাই সংঘাত সংঘর্ষ নিয়ে থানার পুরো ফোর্স ব্যস্ত ছিল সেকারণে বিষয়টি যাছাই-বাছাই করা সম্ভব হয়নি। মূলত ২০ জুলাই থেকে আমরা যাছাই-বাছাই সাপেক্ষে আটক করছি।
পরে বিষয়টি আমাদের নলেজে আসা মাত্রই দ্রুত আমরা আদালতের সঙ্গে কথা বলেছি। আজ আদালত তার জামিন মঞ্জুর করেছেন। প্রয়োজনীয় কাজ শেষে আইনি প্রক্রিয়ায় মাহিমকে এই মামলা থেকে অব্যাহতি দেয়া হবে। কারণ সে ওই ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছিল না বলেও জানান তিনি।