রাজধানীর মোহাম্মদপুরে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন কাওসার হোসেন (২৩) নামের এক যুবক। মৃত্যুর আগে লেখা চিরকুটে তিনি লিখে গেছেন— ‘আমার একটাই দোষ, আমি গরিব। আমি কাউকে কোনো দোষ দিচ্ছি না, নিজের ইচ্ছায় জীবন ত্যাগ করলাম।’
জানা গেছে, বুধবার (১৪ মে) রাত সাড়ে ১০টার দিকে মোহাম্মদপুরের একটি ভাড়া বাসা থেকে তার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। মরদেহর পাশেই পাওয়া যায় হৃদয়বিদারক ওই চিরকুটটি।
নিহত কাওসার পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার মদনপুরা ইউনিয়নের বাসিন্দা শাহ আলম মৃধার ছেলে। পরিবারের হাল ধরার দায়িত্ব তার কাঁধেই ছিল। বাবা মারা যাওয়ার পর পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি হিসেবে কাওসার ঢাকায় পাড়ি জমান।
২০২৪ সালে বাউফল সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন তিনি। এরপর পরিবারের সবাইকে নিয়ে রাজধানীতে এসে শ্রমিকের কাজ শুরু করেন।
কিন্তু কোথাও স্থায়ী কাজ না পেয়ে একপর্যায়ে তিনি হতাশ হয়ে পড়েন। সংসার চালাতে গিয়ে ধীরে ধীরে দেনায় জড়িয়ে পড়েন কাওসার।
নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, জীবনের এই টানাপোড়েনে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন তিনি।
তার চিরকুটে লেখা ছিল, ‘আমার জীবনে তিনজন মানুষ ছিল—মা, বউ আর ভাই। আল্লাহ তুমি ওদের দেখে রাইখো।’
কাওসারের এক বন্ধু জানান, “ও বরাবরই খুব সংগ্রামী ছিল। কিন্তু জীবনের চাপে একেবারে ভেঙে পড়েছিল। কোনোদিন ভাবিনি ও এমন সিদ্ধান্ত নিতে পারে।”
নিহতের মরদেহ উদ্ধারে করে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে তার মায়ের নিকট হস্তান্তর করা হয়। তবে আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে মা মরদেহ বাড়িতে নিতে পারেননি। পরে বাউফল উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের সহায়তায় মরদেহ কাওসারের গ্রামের বাড়িতে পৌঁছানো হয় এবং সেখানেই তার দাফন সম্পন্ন হয়।