রাজধানীর ধানমন্ডিতে পুলিশের সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওতে দেখা যায়, এক তরুণ পুলিশের ওপর চাপ দিচ্ছেন একজন প্রকাশককে গ্রেপ্তারের জন্য। তরুণ বলছেন, ‘আমি বলছি, আপনি গ্রেপ্তার করেন।’ জবাবে পুলিশ কর্মকর্তা জানান, মামলা না থাকায় গ্রেপ্তার সম্ভব নয়।
ঘটনাটি সোমবার রাতের। ধানমন্ডির ৪ নম্বর সড়কে কিছু ব্যক্তি ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা’ পরিচয়ে এক প্রকাশকের বাসায় ঢুকতে চেয়েছিলেন। তাঁরা অভিযোগ করেন, ওই প্রকাশক ‘ফ্যাসিবাদের দোসর’। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাঁদের বাধা দেয়।
ধানমন্ডি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তখন জানিয়ে দেন, অভিযুক্ত প্রকাশকের বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই। তাই তাঁকে গ্রেপ্তার করা যাবে না। কিন্তু তরুণেরা এরপরও পুলিশের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে থাকেন। একপর্যায়ে তাঁরা ওসিকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘টাকা খেয়ে বসে আছেন’, এমন অভিযোগও তোলেন।
পুলিশের ধানমন্ডি অঞ্চলের সহকারী কমিশনার (এসি) শাহ মোস্তফা তারিকুজ্জামান বলেন, বারবার সতর্ক করার পরও ওই ব্যক্তিরা ‘সিন ক্রিয়েট’ করার চেষ্টা করছিলেন। ফলে বিশৃঙ্খলা এড়াতে তিনজনকে হেফাজতে নেওয়া হয়। তিনি জানান, এখনও তাঁদের বিষয়ে ‘ডিসপোজাল’ (পরবর্তী ব্যবস্থা) ঠিক হয়নি।
বিষয়টি নিয়ে ধানমন্ডি থানার সামনে অনেকেই জড়ো হচ্ছেন। কেউ কেউ পুলিশের ওপর ‘আলটিমেটাম’ দিচ্ছেন বলেও জানান ওই পুলিশ কর্মকর্তা।
এদিকে জানা গেছে, হেফাজতে নেওয়া ব্যক্তিদের একজন হলেন মোহাম্মদপুর থানার ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের’ আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম রাব্বি। মঙ্গলবার দুপুরে সংগঠনটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, ‘নৈতিক স্খলনজনিত কারণে’ তাঁকে সাংগঠনিক কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
সম্প্রতি নানা ঘটনায় মামলা নিয়ে বিতর্ক বাড়ছে। অভিযোগ রয়েছে, কখনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে, কখনো ব্যক্তি দ্বন্দ্ব বা ব্যবসায়িক বিরোধে ইচ্ছেমতো মামলা করা হচ্ছে। এমন প্রেক্ষাপটে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও জানিয়েছে, শুধু মামলা হলেই কাউকে গ্রেপ্তার করা যাবে না।
২০২৪ সালের ৩ সেপ্টেম্বর দেওয়া এক বিজ্ঞপ্তিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছিল, কিছু ‘অতি উৎসাহী মহল’ ঢালাওভাবে মামলা দিয়ে পুলিশকে ব্যবহার করার চেষ্টা করছে।
এই ঘটনার আগের দিন অভিনেত্রী নুসরাত ফারিয়াকে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। সেই গ্রেপ্তার নিয়েও সমালোচনা হয়। পরে তিনি জামিনে মুক্তি পান।