ইউএনও’র কার্যালয়ের সামনে তিন দফা দাবিতে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের অবস্থান কর্মসূচি পালিত হয়েছে।
সোমবার (১৩ মে) বেলা ১২ টা থেকে তিনটা পর্যন্ত শত শত ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর নারী পুরুষ এই কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন। আদিবাসী সমন্বয় কমিটির ব্যানারে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।
এর আগে একটি বিক্ষোভ মিছিল শেরপুর শহর ও ঢাকা বগুড়া মহাসড়ক প্রদক্ষিণ করে।
ইউএনও’র কার্যালয়ের সামনে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের অবস্থান কর্মসূচিতে সমন্বয় কমিটির সভাপতি সন্তোষ সিং বাবুর সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আদিবাসী ইউনিয়ন কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি রেবেকা সরেন, সাধারণ সম্পাদক শ্রীকান্ত মাহাতো, সিপিবির বগুড়া জেলার সভাপতি কমরেড জিন্নাহতুল জিন্নাহ, শেরপুর উপজেলার সভাপতি হরি শংকর সাহা, বাংলাদেশ আদিবাসী ইউনিয়ন শেরপুর উপজেলার সভাপতি কমল সিং, আদিবাসী পরিষদের বগুড়া জেলার সভাপতি বাসুদেব বাগদি, ডা. তন্ময় সান্যাল প্রমূখ।
প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা বলেন, আদিবাসীরা এই এলাকার জঙ্গল অনাবাদি জমিকে চাষযোগ্য করে বংশপরম্পরায় ভোগদখল করছে। আইনের মারপ্যাঁচে এগুলো এখন সরকারের সম্পত্তি।
আদিবাসীরা সরকারের সম্পত্তি রক্ষার আন্দোলন করলেও সরকারি প্রশাসন নির্বিকার। তারা ভূমি দস্যুদের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। ২০১৭ সাল থেকে এ পর্যন্ত আদিবাসীদের ওপর ২০টির বেশি হামলার ঘটনা ঘটেছে। তাদের ঘরবাড়ি ভাঙচুর, লুটপাট, আবাদি জমি ও পুকুর দখল, সৎকারে ব্যবহৃত শ্মশান ও কালী মন্দির ভাঙচুর এবং শতাধিক নারী-পুরুষ ও শিশুকে গুরুতর আহত করার ঘটনা ঘটেছে।
এসব নিয়ে এ পর্যন্ত শেরপুর থানা-পুলিশের কাছে অন্তত ২০টির অধিক লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে মাত্র তিনটি অভিযোগ এজাহার হিসেবে গ্রহণ করলেও পুলিশ কাউকে আটক করেনি।
একই ব্যক্তিরা গত ৬ মার্চ আদিবাসী নেতা ও ভবানীপুরের ইউপি সদস্য সন্তোষ কুমার সরকারের বাড়িতে প্রায় ৫ ঘণ্টা ধরে হামলা চালিয়ে ৯ বিঘা পুকুরের মাছ লুটে নেয়। এ সময় স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতা চেয়েও পাওয়া যায়নি। একজন জনপ্রতিনিধি হয়েও দুইমাস ধরে তিনি ঘর ছাড়া।
এর মধ্যেই গত ২ মে তার জমি থেকে সশস্ত্র অবস্থায় ধান কেটে নেওয়া হয়েছে। থানায় অভিযোগ দেওয়া হলেও কাউকে আটক বা গ্রেফতার করা হয়নি।
বক্তারা ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদের উপর হামলা ও সম্পদ লুটপাটকারীদের অবিলম্বে গ্রেফতার করা, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মালা প্রত্যাহার ও জান মালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং ২০১৮ সালের গঠিত তদন্ত কমিটির চিহ্নিত খাস জমি, পুকুর ও দেবত্তোর সম্পত্তি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠিদের বন্দোবস্ত দেওয়ার দবি জানান। তারা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত লাগাতার আন্দোলনের ঘোষণা দেন।