বগুড়ার শেরপুর উপজেলার সুঘাট ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. নুরনবী মন্ডলের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ এনে ইউনিয়ন পরিষদের সকল সদস্য তাকে অপসারণের দাবি জানিয়েছেন। এ নিয়ে গত ১৫ জানুয়ারি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ইউপি নির্বাচিত চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান জিন্নাহ মামলাজনিত কারণে পলাতক থাকায় ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট প্যানেল চেয়ারম্যান-১ হিসেবে মো. নুরনবী মন্ডল দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই তিনি ট্যাক্স আদায়ের অর্থ আত্মসাৎ, টিসিবি কার্ড ও ভাতা প্রদানে স্বজনপ্রীতি এবং আর্থিক সুবিধা গ্রহণ, পরিষদের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে ব্যক্তিগত ইচ্ছায় কাজ করা, পরিষদের কার্যক্রমে অনিয়ম এবং সেবা প্রার্থীদের প্রতি খারাপ আচরণের মতো গুরুতর অভিযোগে জড়িয়ে পড়েন। এছাড়া নিয়মিত পরিষদে উপস্থিত না থাকা ও গ্রাম আদালত পরিচালনায় ঘুষ গ্রহণের অভিযোগও তার বিরুদ্ধে তোলা হয়েছে।
অভিযোগের ভিত্তিতে গত ১৪ জানুয়ারি ইউনিয়ন পরিষদের কার্যনির্বাহী সভায় সদস্যরা সর্বসম্মতিক্রমে নুরনবী মন্ডলের প্রতি অনাস্থা প্রস্তাব পাস করেন। পরের দিন সদস্য মো. আবু হাসানের নেতৃত্বে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ জমা দেওয়া হয়। পাশাপাশি সদস্যরা স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন, ২০০৯ এর অধীনে প্যানেল চেয়ারম্যান-২ আবু হাসানকে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব প্রদানের আবেদন করেন।
এ প্রসঙ্গে ৭, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মোছা. আনজু মনোয়ারা জানান, নুরনবী মন্ডল দায়িত্ব পালনে অযোগ্য এবং পরিষদের কার্যক্রমে সদস্যদের মতামতের কোনো গুরুত্ব দেন না। প্যানেল চেয়ারম্যান-২ আবু হাসানও দাবি করেন, বর্তমান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আর্থিক অনিয়মসহ নানা অসদাচরণের মাধ্যমে পরিষদের কার্যক্রম ব্যাহত করেছেন।
অভিযোগ সম্পর্কে মো. নুরনবী মন্ডল বলেন, তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো মিথ্যা ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। তিনি পরিষদের সব কাজ সদস্যদের সঙ্গে পরামর্শ করেই করেছেন বলে দাবি করেন।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আশিক খান অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তদন্ত প্রক্রিয়া শেষে এ ঘটনার সুরাহা হবে বলে প্রত্যাশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।