ক্ষমতার অপব্যবহার ও দুর্নীতির অভিযোগে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়ার সাবেক এপিএস মোয়াজ্জেম হোসেনের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে আদালত। একই সঙ্গে তার জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) ব্লক করে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
শনিবার (২৪ মে) ঢাকার জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. জাকির হোসেন এই আদেশ দেন। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ নির্দেশ দেওয়া হয়।
দুদকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে তদবির, টেন্ডার বাণিজ্য এবং ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে শত কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে। এই অভিযোগের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে কমিশন। প্রাথমিক অনুসন্ধানে কিছু অসংগতি ধরা পড়ায় তার বিদেশে যাত্রা ও এনআইডি ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা চাওয়া হয়।
দুদক বলছে, মোয়াজ্জেমের ব্যাংক হিসাব, সম্পদ এবং আর্থিক লেনদেন খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে মামলা করা হবে।
উল্লেখ্যে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী মোয়াজ্জেম হোসেনকে ২০২৪ সালের ১৪ আগস্ট স্থানীয় সরকার এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া তার এপিএস হিসেবে নিয়োগ দেন। তবে ২০২৫ সালের ২১ এপ্রিল তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। পরদিন সংশোধিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, তার পদত্যাগপত্র গৃহীত হয়েছে।
এর আগে তার বিরুদ্ধে তদবির বাণিজ্য ও নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছিল। সে সময় থেকেই তার কার্যক্রম নিয়ে নানা আলোচনা শুরু হয়।
এপিএস–সংক্রান্ত অভিযোগ ও গুঞ্জন ওঠার পর আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া নিজেই দুদকের কাছে তদন্তের অনুরোধ জানান বলে জানিয়েছেন তিনি।
নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে আসিফ বলেন, “কেউ দুর্নীতিতে জড়ালে, সে যে–ই হোক, আইনের আওতায় আসবে—এটাই নতুন বাংলাদেশের অঙ্গীকার।”
তিনি আরও লেখেন, “রাজনৈতিকভাবে আমাকে বিভ্রান্তিকরভাবে উপস্থাপন করার চেষ্টা হয়েছে। কিন্তু সত্য ও নৈতিক সাহসের ওপর ভরসা রেখেই আমি দুদকের কাছে তদন্তের আহ্বান জানিয়েছি। আশা করি, পেশাদার তদন্তের মাধ্যমে সত্য সামনে আসবে।”
প্রসঙ্গত, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের মাধ্যমে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে আসিফ সজীবের শপথ ছিল উল্লেখযোগ্য ঘটনা। সেই বিপ্লবের অন্যতম সংগঠক ছিলেন আসিফ। তাই তার ঘনিষ্ঠজনের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ উঠায় জনমনে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।