ছয় বছরের পরম যত্নে লালন-পালন করা প্রিয় ষাঁড়টিকে নিয়ে ঢাকার পথে রওনা হয়েছেন পটুয়াখালীর এক কৃষক। প্রিয় নেত্রী খালেদা জিয়াকে উপহার দিতেইএই ‘কালো মানিক’কে নিয়ে যাচ্ছেন তিনি।
পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলার উত্তর ঝাটিবুনিয়া গ্রামের কৃষক সোহাগ মৃধা নিজের হাতে বড় করেছেন ফ্রিজিয়ান জাতের কালো রঙের এই ষাঁড়টি। ভালোবেসে নাম রেখেছেন ‘কালো মানিক’। বৃহস্পতিবার (৫ জুন) সকালে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেন তিনি।
প্রায় ৩৫ মণ ওজন, ১০ ফুট লম্বা এবং ৫ ফুট ৪ ইঞ্চি উচ্চতার কালো মানিককে ঘিরে এলাকাজুড়ে আলোড়ন। একসময় এই ষাঁড়ের দাম উঠেছিল ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত। কিন্তু ভালোবাসার পশুটি কখনোই বিক্রি করতে চাননি সোহাগ। তিনি বলেন, “আমি গণতন্ত্রের মাকে এই গরুটি উপহার দিতে যাচ্ছি। দোয়া করবেন, নেত্রী যেন গরুটি গ্রহণ করেন।”
ঢাকায় পৌঁছানোর জন্য ভাড়া করা হয়েছে তিনটি মিনি ট্রাক। সঙ্গে আছে ব্যানার, বাদ্যযন্ত্র, আর টি-শার্ট পরা সঙ্গীরা। উৎসবমুখর পরিবেশেই রওনা দিয়েছেন সোহাগ।
তিনি জানান, ২০১৮ সালের শেষ দিকে মাত্র ১ লাখ ৩৭ হাজার টাকায় একটি গাভি কেনেন তিনি। সেই গাভি অল্প কিছুদিনের মধ্যেই জন্ম দেয় একটি বাছুরের। সেই বাছুরটিই এখনকার কালো মানিক। দেশীয় খাবার, ঘাস, খড় আর যত্নে গড়ে উঠেছে বিশালদেহী এই ষাঁড়টি।
খালেদা জিয়াকে গরু উপহার দেওয়ার ইচ্ছার পেছনের কাহিনিও জানান সোহাগ। তিনি বলেন, “২০২৩ সালে শেখ হাসিনাকে এক কৃষকের গরু উপহার দেওয়ার সংবাদ দেখে আমারও ইচ্ছা হয়, আমি যদি একদিন আমার নেত্রীকে এমন কিছু দিতে পারতাম। আজ সেই সুযোগ এসেছে।”
সোহাগের মা হাজেরা বেগম বলেন, “ওর মন চেয়েছে, তাই দিচ্ছে। ছোটবেলা থেকেই বিএনপির প্রতি ওর ভালোবাসা।”
স্ত্রী সুলতানা আক্তার পলির ভাষায়, “কালো মানিক আর আমাদের ছোট ছেলের বয়স একই। দুজনকেই একই স্নেহে বড় করেছি। আমার স্বামীর স্বপ্ন পূরণ হচ্ছে দেখে আমরাও খুশি।”
আমড়াগাছিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মো. রফিকুল ইসলাম জানান, “সোহাগ মৃধা একজন বিএনপির নিবেদিতপ্রাণ কর্মী। দীর্ঘ ছয় বছর গরুটি নিজের সন্তানের মতো পালন করেছেন। আজ তা তিনি নেত্রীকে উৎসর্গ করছেন, এটা সত্যিই বিরল ভালোবাসার নজির।”