খুলনায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ১ম সারির নেতা মো: বদরুল হাসানক গত দুই ধরে নিখোঁজ রয়েছেন। এঘ টনায় থানায় অভিযোগ করা হলেও পুলিশ এখনও তাকে উদ্ধার করতে পারেনি। নিখোঁজ বদরুল হাসানের সহকর্মী, স্ত্রী ও পরিবারের সদস্যরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। শনিবার (০৭ সেপ্টেম্বর) একমাত্র সন্তান শিশু সাফওয়ানকে নিয়ে খুলনা জেলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছেন বদরুলের স্ত্রী সাঈদা খাতুন।
তিনি বলেন, স্বামী সন্তানকে নিয়ে খুলনা নগরীর ১৮ নং ওয়ার্ডের সোনারবাংলা গলিতে বসবাস করেন তিনি। বদরুল হাসান চট্টগ্রামে সরকারী হাজী মুহম্মদ মুহসীন কলেজের শিক্ষার্থী ছিলেন তিনি। পড়ালেখার পাশাপশি বদরুল পপুলার ডায়গনস্টিক সেন্টারে পার্টটাইম জব করতেন। এছাড়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন থেকে শুরু করে ছাত্র-জনতার গণ-আন্দোলনে অনন্য ভূমিকা ছিল তার। দেশে ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের গঠিত ত্রান সংগ্রহের কাজে দিন রাত পরিশ্রম করেছেন তিনি। ঘটনার দিনও সে খুলনা নগরীর ময়লাপোতা মোড়ে ত্রাণ সংগ্রহের কাজে নিয়োজিত ছিল।
বদরুলের স্ত্রী সাঈদা খাতুন বলেন, গত ৫ সেপ্টেম্বর বিকাল ৩টার দিকে আমার স্বামী বাসা থেকে বের হয়। এদিন সন্ধ্যা ৭টার দিকে মোবাইল ফোনে তার সঙ্গে কথা হলে বদরুল জানায়, আমি ত্রাণের কাজে ব্যস্ত আছি। দ্রুত বাসায় ফিরবো আমি।এরপর আর ওই আর বাসায় ফেরেনি। পরে রাত ১১টার পরে আমি আমার স্বামী বদরুল’কে ফোন দিলে একবার তার ফোন নাম্বার খোলা পাই। কিন্তু সে আমার কল রিসিভ করেনি। তারপর থেকেই তার নম্বর বন্ধ।
তিনি আরও বলেন, পরিবারের পক্ষ থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ ও বেশকয়েকজন সমন্বয়কদের সঙ্গে যোগাযোগ করেও তার কোনো সন্ধান পাওয় যায়নি।এছাড়াও সম্ভাব্য সকল জায়গায় খুঁজেছি। কিন্তু তার কোনো কোন খোঁজ না পেয়ে গত শুক্রবার (০৬ সেপ্টেম্বর) সকালে সোনাডাঙ্গা মডেল থানায় একটি সাধারণ জিডি করেছি। এছাড়াও গত বৃহস্পতিবার রাতেও খুলনা থানায় আরও একটি জিডি করেছি। কিন্তু এখনও পর্যন্ত তার কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। ফলে পরিবারের সবাই উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে।
বদরুল হাসানকে কোনো কোন গোয়েন্দা সংস্থা, র্যাব বা পুলিশ নিয়ে গেছে কিনা, অথবা কারো সঙ্গে কোন দ্বন্দ্ব ছিল কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে সাঈদা খাতুন বলেন, আসলে এই মূহুর্তে আমরা এ বিষয়ে কিছুই বলতে পারছি না। তবে তাকে এখন দ্রুত খুঁজে বের করা জরুরি।
এ বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা আহম্মদ হাফিজ রাহাত ও মুরছালীন বলেন, বদরুল হাসান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রথম সারির নেতা ছিলেন। খুলনায় ছাত্র আন্দোলনে সামনের সারি থেকে তিনি নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি। তার এমন হঠাৎ নিখোঁজ হয়ে যাওয়া রহস্যজনক।