জুলাই গণহত্যা মামলায় আসামির সংখ্যা বেশি হওয়ায় তদন্তে বাধা সৃষ্টি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
মঙ্গলবার (১০ জুন) গাজীপুরের গাছা থানা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “মামলায় অযথা অনেক নাম ঢোকানো হয়েছে। এত নাম থাকার ফলে তদন্তে গতি আসছে না। নিরপেক্ষ তদন্তের স্বার্থে বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে।”
তিনি আরও জানান, সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের বিদেশ যাত্রাকে কেন্দ্র করে বরখাস্ত হওয়া পুলিশ কর্মকর্তাদের বিষয়ে তদন্ত চলছে। যাচাই-বাছাই করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান উপদেষ্টা।
মামলা বাণিজ্য রোধে অনলাইন মামলা পদ্ধতি চালু হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। “সিলেট থেকে এর কার্যক্রম শুরু হয়েছে, পর্যায়ক্রমে তা দেশব্যাপী বিস্তৃত করা হবে।
এর আগের দিন, সোমবার (৯ জুন) রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানা পরিদর্শনে গিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি, কারণ তদন্তে তার বিরুদ্ধে প্রাথমিকভাবে অপরাধ প্রমাণিত হয়নি। তবে অভিযোগ নিশ্চিত হলে তার বিরুদ্ধেও আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
তিনি আরও বলেন, আবদুল হামিদের বিদেশ যাত্রার সময় কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার (এসপি) ও সংশ্লিষ্ট তদন্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে যেসব প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল, সেগুলোরও তদন্ত চলছে।
উল্লেখ্য, গত রোববার (৮ জুন) দিবাগত রাত দেড়টার দিকে থাই এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে থাইল্যান্ড থেকে দেশে ফিরেছেন সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। এর আগে ৮ মে দিবাগত রাত ৩টার দিকে থাই এয়ারওয়েজের টিজি ৩৪০ ফ্লাইটে চিকিৎসার জন্য ব্যাংকক যান তিনি।
তার বিদেশযাত্রার বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়।
এই প্রেক্ষাপটে ১০ মে অন্তর্বর্তী সরকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আওয়ামী লীগের বিচার কার্যক্রম শেষ না হওয়া পর্যন্ত দলটির সব কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করে।
গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র ও জনতার এক আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর আওয়ামী লীগের অনেক শীর্ষ নেতা দেশ ত্যাগ করেন। তবে আবদুল হামিদ তখন দেশেই অবস্থান করছিলেন। প্রায় নয় মাস পর তিনি চিকিৎসার জন্য ব্যাংকক যান এবং সম্প্রতি দেশে ফিরলেন।