গাইবান্ধায় ট্রেনের নিচে লাফ দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন রাজিয়া বেগম (২৩) নামে এক নারী। এ সময় তাকে বাঁচাতে গিয়ে মো: জুবায়ের রহমান (১৮) নামে এক কলেজ ছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। তবে দেড় বছরের শিশু সন্তানটি আহত হলেও প্রাণে বেঁচে গেছে। সোমবার (০১ এপ্রিল) সকালে গাইবান্ধা জেলা সদরের মাঝিপাড়া এলাকার রেললাইনে এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে।
নিহত রাজিয়া বেগম সদর উপজেলার মধ্য গোবিন্দপুর গ্রামের মো: আনোয়ার হোসেনের স্ত্রী। নিহত কলেজছাত্র জুবায়ের রহমান জামিল সদর উপজেলার এসকেএস স্কুল অ্যান্ড কলেজের সায়েন্সের সেকেন্ড ইয়ারের শিক্ষার্থী ও সাঘাটা উপজেলার ভরতখালী এলাকার মো: জাহিদুল ইসলামের ছেলে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গাইবান্ধা জেলা সদরের মাঝিপাড়া এলাকার মো: আনোয়ার হোসেনের সাথে ৩ বছর আগে মোবাইল ফোনে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে রাজিয়ার। এরপর সুনামগঞ্জ থেকে গাইবান্ধায় এসে আনোয়ার হোসেনকে বিয়ে করেন রাজিয়া খাতুন। প্রেমের সম্পর্কে বিয়ে হওয়ায় রাজিয়ার বাড়ি থেকে কেউ গাইবান্ধায় আসতো না। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে রাজিয়াকে নিয়মিত শারীরিক নির্যাতন করতো তার স্বামী আনোয়ার।
এরই ধারাবাহিকতায় রবিবার (৩১ মার্চ) রাজিয়াকে শারীরিক নির্যাতন করে রাত ভর। দেড় বছরের শিশু সন্তানসহ তাকে ঘড়ে উঠতে দেয়নি স্বামী আনোয়ার। এরপর সোমবার সকালে মনের ক্ষোভে বাড়ির পাশের রেললাইনে শিশু ছেলে আবিরকে নিয়ে আত্মহত্যার জন্য লাইনে দাঁড়ান রাজিয়া।
এ সময় ওই এলাকার ১টি ছাত্রাবাসে থাকা এইচএসসি শিক্ষার্থী জুবায়ের রহমান তাদের দেখতে পেয়ে বাচাঁনোর জন্য চেষ্টা করেন। লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় রাজিয়ার সাথে জুবায়েরের ধস্তা-ধস্তির একপর্যায়ে শিশুটিকে লাইনে পাশে ছুড়ে ফেলতে পারলেও এর মধ্যেই দোলনচাঁপা ট্রেনের ধাক্কায় লাইন থেকে ছিটকে পড়েন ২ জনই।
পরে স্থানীয়রা গুরুতর আহত অবস্থায় তাদের দুজনসহ শিশুটিকে গাইবান্ধা জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখান থেকে তাদের ২ জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতালে নেওয়ার পথেই মারা যায়।
গাইবান্ধায় ট্রেনের নিচে কাটা পরে দুই জনের মৃত্যুর বিষয়ে বোনারপাড়া রেলওয়ে থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো: ফারুক হোসেন বলেন, ঘটনাস্থল থেকে নিহতদের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের শেষে নিহতদের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করা হয়েছে।