আওয়ামী লীগ দীর্ঘদিন ধরে গুম, খুন, গায়েবি মামলা আর নির্বাচনি ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দেশে এক ধরনের ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠা করেছিল বলে মন্তব্য করেছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান।
তিনি বলেন, “যদি রাজনৈতিক নেতাকর্মীরা আবার সেই পুরনো পথে হাঁটেন, তবে ইতিহাস তাদের ক্ষমা করবে না।”
বুধবার (৪ জুন) সকালে ঝিনাইদহের জোহান ড্রিম ভ্যালি পার্কে ‘দ্য হিরো’স অব ঝিনাইদহ’ স্লোগানে আয়োজিত এক স্মরণসভায় এসব কথা বলেন তিনি। জুলাই মাসের গণ-অভ্যুত্থানে শহিদ ও আহতদের পরিবারকে সম্মান জানাতে এই আয়োজন করা হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, “২০০৮ সালের পর থেকে আওয়ামী লীগ সরকার প্রায় ৭০০ জনকে গুম করেছে, সাড়ে চার হাজার মানুষকে বিনা বিচারে হত্যা করেছে এবং প্রায় ৬০ লাখ মানুষকে গায়েবি মামলায় হয়রানি করেছে। তারা গায়ের জোরে রাষ্ট্র চালিয়েছে, এখন পালিয়ে বেড়াচ্ছে।”
তিনি আরও বলেন, “আওয়ামী লীগের পথ ছিল অন্ধকার—একটি কানাগলি পথ, যেখানে আইনের শাসন কিংবা জনগণের অধিকার ছিল না।”
বর্তমান সরকারের প্রসঙ্গে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, “এই সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে কেউ গুম হয়নি, পুলিশ বাদী হয়ে কোনো গায়েবি মামলা দেয়নি। এটা একটা বড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত। তাই জনগণের উচিত এই সরকারের ওপর আস্থা রাখা।”
তিনি আরও বলেন, “জুলাই বিপ্লব কোনো একক দলের নয়—এটা একটি বৈষম্যহীন, ন্যায়বিচারভিত্তিক সমাজ নির্মাণের স্বপ্ন ছিল। সেই চেতনাকে কেউ যেন বিশ্বাসঘাতকতা না করে।”
ছাত্র ও রাজনৈতিক সংগঠনগুলোর উদ্দেশে তিনি বলেন, “যদি বিভাজন, উত্তেজক বক্তব্য বা পারস্পরিক অসম্মান দেখা দেয়, তবে ঐক্য ভেঙে যাবে। আর ঐক্য ভাঙলে বিপ্লবও ব্যর্থ হবে।”
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক রিফাত রশিদ। সঞ্চালনায় ছিলেন ঝিনাইদহ শাখার সদস্য সচিব সাইদুর রহমান।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট এমএ মজিদ, গণঅধিকার পরিষদের জেলা সভাপতি প্রভাষক সাখাওয়াত হোসেন, ইসলামী আন্দোলনের জেলা সভাপতি এইচএম মোমতাজুল করীম, ঝিনাইদহ জেলা জামায়াতের আমির, চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি মো. মোয়াজ্জেম হোসেন এবং সদর হাসপাতালের কনসালটেন্ট ডা. মো. মনিরুল ইসলাম।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া বিভিন্ন রাজনৈতিক, ছাত্র, সামাজিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের নেতাকর্মীরাও অনুষ্ঠানে অংশ নেন।