গ্রেপ্তারের আতঙ্কে বাড়ি থেকে পালিয়ে লাশ হয়ে ফিরলেন বিএনপি কর্মী। বগুড়ার শেরপুরে মো: আব্দুল মতিন (৫০) নামের এক বিএনপি কর্মীকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) বিশালপুর ইউনিয়নের মান্দাইল গ্রামে সরিষার খেত থেকে তাঁর রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করা হয়।
মান্দাইল গ্রামের কছিম উদ্দিনের ছেলে মো: মতিন। তিনি বিএনপির বিশালপুর ইউনিয়ন কমিটির সদস্য। ঘটনা স্থলে নিহতের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিএনপির ডাকা অবরোধ কর্মসূচি পালন করার সময় (১৫ নভেম্বর) বিএনপি-আওয়ামী লীগ এবং পুলিশের ত্রিমুখী সংঘর্ষে পুলিশসহ উভয় দলের বেশ কিছু কর্মী আহত হন। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে ৬৭ জন বিএনপি নেতা-কর্মীর নামে মামলা দায়ের করেন। ওই মামলার ৬৪ নম্বর আসামি ছিল মতিন।
মতিনের ছেলে মিলন রহমান জানান, গ্রেপ্তারের আতঙ্কে মামলার পর থেকেই আটক এড়াতে বাবা বাড়িতে থাকতেন না। বুধবার (২২ নভেম্বর) সকালে তিনি বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান। বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) সকালে কৃষকেরা জমিতে ধান কাটতে গেলে পাশের সরিষার খেত থেকে মতিনের রক্তাক্ত মরদেহ দেখতে পান। তাঁকে দ্রুত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। বাবার মাথার পেছনে চারটি ধারালো অস্ত্রের আঘাত রয়েছে।
বগুড়া জেলা পুলিশ সুপার মো: আব্দুর রশিদ ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (শেরপুর সার্কেল) সজীব শাহরিয়ার ও শেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাবু কুমার সাহা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিশালপুর ইউনিয়ন পরিষদের এক সদস্য বলেন, পুলিশের মামলার কারণে আটকের আতঙ্কে মো: মতিন বাড়িতে থাকতেন না। তিনি বাড়ি পাশে ঝিনাগাড়ি পুকুর পারে রাত্রিযাপন করতেন। বৃহস্পতিবার সকালে একটি পুকুরের পাশের জমি থেকে মতিনকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় ।
এ বিষয়ে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো: রফিকুল ইসলাম মিন্টু জানান, আমাদের অনেক নেতা-কর্মীদের মতো মতিনও পুলিশের মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার এড়াতে পালিয়ে থাকত। এই হত্যাকাণ্ডে আওয়ামী লীগের লোকজন জড়িত থাকতে পারে বলে আমরা ধারণা করেছি।
শেরপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো: কামাল হোসেন বলেন, মতিনের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। এ বিষয়ে আইনগত পদক্ষেপ প্রক্রিয়াধীন।