ছেলের অপরাধে নৈশ্যপ্রহরী বাবাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে বগুড়ার শেরপুর উপজেলা পল্লী উন্নয়ন বোর্ড। অনুমতি ছাড়াই গাছ কাটার অপরাধে রবিবার (৫ মে) পল্লী উন্নয়ন বোর্ড অফিসের নৈশ প্রহরী আকবর আলীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছেন উপজেলা সহকারী পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা আরিফুর রহমান।
এর আগে শুক্রবার (৩ মে) দুপরে উপজেলা পল্লী উন্নয়ন বোর্ডের আওতাভুক্ত কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতির ৩টি গাছ কেটে নেয় পল্লী উন্নয়ন বোর্ড অফিসের নৈশ প্রহরী আকবর আলীর ছেলে আরিফুর ইসলাম।
উপজেলা পল্লী উন্নয়ন বোর্ডের (বিআরডিবি) কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতির নামে উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন ৪০ শতক কেনা সম্পত্তি রয়েছে। এই সম্পত্তিতে রয়েছে ছোট বড় অন্তত ৩৫ টি গাছ। এসব গাছের মধ্যে মেহগনি, আকাশমনি, ইউক্যালিপটাস ও আম গাছ রয়েছে। এই জায়গা থেকে কোনো গাছ কাটা অনুমোদন কাউকে দেওয়া হয়নি।
সোমবার সরেজমিনে গেলে দেখা যায় শেরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বাসভবনের উত্তরে কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতির জায়গায় পড়ে আছে কিছু গাছের গুড়ি ও ডালপালা। ওই জায়গার পার্শ্ববর্তী একটি ভবনের মালিক আব্দুস সালাম জানান, দুপুর দুইটার দিকে পাঁচ ছয় জন শ্রমিক এসে গাছ কাটা শুরু করেন। আমি তাদের কাছ থেকে খড়ি কিনতে চাইলে তারা বিক্রি করতে অস্বীকার করে। কিন্তু কারা গাছ কাটছেন এ বিষয়ে আমি জানিনা।
প্রত্যক্ষদর্শী আরিফুর রহমান ফয়সাল (৪৮) জানান, পল্লী উন্নয়ন বোর্ড অফিসের নৈশ প্রহরী আকবর আলীর ছেলে আরিফুর ইসলাম গাছগুলো কেটে নিয়ে গেছে। মেহগনি, আকাশমনি, ইউক্যালিপটাস প্রজাতির প্রায় ৫ টি গাছ কাটা হয়েছে। সেগুলোর বাজার মূল্য প্রায় ৫০ হাজার টাকা।
অভিযুক্ত আরিফুল ইসলাম বলেন, এগুলো কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতির গাছ, সরকারি নয়। সমিতির ৪০ শতক জায়গার আমাকে লিজ দেওয়ার কথা। সেখানে একটি রিক্সার গ্যারেজ ও কার ওয়াশ সেন্টার তৈরি করার জন্য সকল গাছ কেটে ফেলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কাজ এগিয়ে নেওয়ার জন্য অফিসকে অবগত করে কয়েকটি গাছ কাটা হয়েছে।
এ বিষয়ে শেরপুর উপজেলা সহকারী পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা আরিফুর রহমান জানান, ওই জায়গাটি উপজেলা পল্লী উন্নয়ন বোর্ডের আওতভ’ক্ত কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতির। সমিতির সদস্যদের ভোটে নির্বাচিত সভাপতি ও আমার তত্তাবধায়নে সব কাজ হয়ে থাকে। ওই জায়গাটি আমাদের নৈশ প্রহরী আকবর আলীর ছেলের লিজ নেওয়ার কথা। কিন্তু এর আগেই সে কিছু গাছ কেটেছে। খবর পেয়ে গাছগুলো আটকানোর ব্যবস্থা করেছি।
যেহেতু আকবর আলীর ছেলেকে জায়গাটি লিজ দেওয়া কথা চলছিলো সেহেতু এ ঘটনায় আকবর আলীর বিরুদ্ধে কেন প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে না তার সন্তসজনক জবাব আগামী ৭ কর্ম দিবসের মধ্যে দাখিলের জন্য বলা হয়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুমন জিহাদী বলেন, এ ঘটনায় প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।