বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহম্মদ ইউনূসের সাম্প্রতিক এক বক্তব্যের জেরে ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ত্রিপুরার রাজনৈতিক দল ত্রিপুরা মোথা পার্টির শীর্ষ নেতা প্রদ্যুৎ মাণিক্য দেববর্মা সরাসরি বাংলাদেশ ভেঙে ফেলার হুমকি দিয়েছেন।
তিনি বলেছেন, চট্টগ্রাম বন্দর দখল করতে পারলে ভারতের সেভেন সিস্টার্স অঞ্চলের জন্য সুবিধা হবে।
মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স-এ (সাবেক টুইটার) পোস্ট করা এক বার্তায় দেববর্মা বলেন, “ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলের সঙ্গে বাকি অংশের যোগাযোগ উন্নত করার কোনো প্রয়োজন নেই। বরং বাংলাদেশের চট্টগ্রাম অঞ্চল দখল করা গেলে একদিকে ভৌগলিক বিচ্ছিন্নতা দূর হবে, অন্যদিকে ভারতের সেভেন সিস্টার্স রাজ্যগুলোর জন্য এটি একটি কার্যকর সমুদ্রবন্দর হয়ে উঠবে।”
ড. ইউনূস সম্প্রতি চীন সফরে গিয়ে এক বক্তব্যে বলেছিলেন, “সেভেন সিস্টার্স অঞ্চলের কোনো সমুদ্রবন্দর নেই। আমরাই তাদের একমাত্র সংযোগস্থল। এটি আমাদের জন্য বিশাল সম্ভাবনা এবং চীনের অর্থনীতির জন্যও একটি নতুন ক্ষেত্র হতে পারে।”
তার এই মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা বলেন, “এই বক্তব্য ভারতের কৌশলগত ‘চিকেনস নেক’ করিডোরের দুর্বলতাকে স্পষ্ট করে দিয়েছে। ভারতের উচিত আশপাশে আরও শক্তিশালী রেল ও সড়ক নেটওয়ার্ক তৈরি করা।”
হিমন্ত বিশ্বশর্মার মন্তব্যের পর আরও কড়া প্রতিক্রিয়া জানান ত্রিপুরা মোথার নেতা প্রদ্যুৎ মাণিক্য দেববর্মা। তিনি বলেন, “ভারতের সবচেয়ে বড় ভুল ছিল ১৯৪৭ সালে চট্টগ্রাম বন্দর পাকিস্তানকে ছেড়ে দেওয়া। চট্টগ্রামের পাহাড়ি অঞ্চলের মানুষ ভারতের সঙ্গে থাকতে চেয়েছিল, কিন্তু তাদের সেই সুযোগ দেওয়া হয়নি।”
তিনি আরও ইঙ্গিত দেন যে, পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত বিভিন্ন নৃগোষ্ঠীর সমর্থন নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দর দখল করা সম্ভব।
এই বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া আসেনি। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এটি শুধু ভারতের রাজনৈতিক প্রোপাগান্ডা নয়, বরং দুই দেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে অস্থিরতা তৈরি করতে পারে।
এখন দেখার বিষয়, এই উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে দুই দেশের সরকার কীভাবে প্রতিক্রিয়া জানায় এবং কূটনৈতিক পর্যায়ে এর কী প্রভাব পড়ে।