গাজীপুরের কোনাবাড়ীতে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে মো: হৃদয় (২০) নামের এক কলেজ শিক্ষার্থীকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় পুলিশ কনস্টেবল মো: আকরাম হোসেনকে (২২) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আকরাম গাজীপুর শিল্প পুলিশে কর্মরত ছিলেন। শুক্রবার (০৬ সেপ্টেম্বর) কিশোরগঞ্জের তাড়াইল উপজেলায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়ে।
শনিবার (০৭ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যার দিকে এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গাজীপুর মহানগর পুলিশের কোনাবাড়ী জোনের সহকারী কমিশনার সুবীর কুমার সাহা।
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে কোনাবাড়ি থানার পাশে কলেজ শিক্ষার্থী হৃদয়কে গুলি করে হত্যা করা হয়। নিহত হৃদয় টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার আলমনগর গ্রামের মো: লাল মিয়ার ছেলে। তিনি হেমনগর ডিগ্রি কলেজে একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলেন। হৃদয় লেখাপড়ার পাশাপাশি কোনাবাড়ী এলাকায় বসবাস করতেন এবং ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বৈষ্যম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গাজীপুরের কোনাবাড়ী সড়ক এলাকায় গত ৫ আগস্ট কলেজছাত্র হৃদয় বিগত আ. লীগ সরকারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন দাবিতে স্লোগান দেন। এসময় কয়েকজন পুলিশ সদস্যের উপস্থিতি দেখতে পেয়ে হৃদয় রাস্তার পাশে অবস্থান নেন। ওই সময় শিল্প পুলিশে কর্মরত বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য কোনাবাড়ী এলাকায় দায়িত্ব পালন করছিলেন।
এ সময় পুলিশ সদস্যরা হৃদয়কে রাস্তার পাশ থেকে ধরে নিয়ে চড়-থাপ্পড় মারেন। এর একপর্যায়ে পুলিশ কনস্টেবল মো: আকরাম অতি উৎসাহী হয়ে পেছন দিক থেকে গুলি করলে হৃদয় ঘটনাস্থলেই মারা যায়। ওই ঘটনায় হৃদয়ের ফুফাতো ভাই মো: ইব্রাহীম বাদী হয়ে কোনাবাড়ী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে শুক্রবার রাতে কিশোরগঞ্জের তারাইল এলাকায় অভিযান চালিয়ে আকরামকে গ্রেফতার করে।
কোনাবাড়ী জোনের সহকারী কমিশনার সুবীর কুমার সাহা জানিয়েছেন, প্রাথমিক তদন্তে কন্সটেবল আকরামের বিরুদ্ধে হত্যাকাণ্ডের যে অভিযোগ করা হয়েছিলো তার সত্যতা পাওয়া গেছে। শুক্রবার ভোরে তাকে কিশোরগঞ্জের তারাইল এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। পরে শনিবার ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে গাজীপুর মেট্টোপলিটন আদালতে সোপর্দ করা হয়। আদালত সোমবার (০৯ সেপ্টম্বর) শুনানির তারিখ নির্ধারণ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। ওই ঘটনায় জড়িত অন্যান্যদেরও গ্রেফতার করা হবে।