সাপের কামড়ে মৃত সাইফুল ইসলামকে বাঁচানোর জন্য নানা রকম আয়োজন করেছেন ওঝারা। শনিবার (২৯ জুন) বিকাল থেকে চলছে তাদের তৎপরতা। গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার পশ্চিম বাসুরা এলাকায় এ ঘটনাটি ঘটেছে। ইতিমধ্যে ওই এলাকার একটি মাঠের চারপাশে ৪টি কলাগাছ পুঁতে মাঝখানে খালি জায়গা রাখা হয়েছে। সেখানে সাপে কাটা ব্যক্তিকে রাখা হবে।
এর চারপাশে বেশ কয়েকটি পানির কলসিও রাখা হয়েছে। অল্প কিছুক্ষণের মধ্যে ওঝারা তাদের কার্যক্রম শুরু করবে বলে জানা যায়। এমন দৃশ্য একনজর দেখার জন্য আশপাশের এলাকা থেকে শত শত মানুষ এসে ভিড় জমিয়েছে ওই স্থানে।
এলাকাবাসী ও নিহতের স্বজনরা জানিয়েছে, শুক্রবার (২৮ জুন) রাত ৯টার দিকে টর্চ লাইট হাতে নিয়ে টেঁটা দিয়ে প্রতিবেশীর সঙ্গে মাছ ধরতে বাড়ির পাশের বিলে যান সাইফুল ইসলাম। এ সময় একটি সাপ তার পায়ে ছোবল বসিয়ে দেয়।
এরপর তিনি টেঁটা সাপটিকে মেরে ফেলেন। পরে দ্রুত বাড়িতে এসে সাপে কামড়ানোর বিষয়টি জানালে পরিবারের লোকজন রাতেই তাকে টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের কুমুদিনী হাসপাতালে নিয়ে যান। শনিবার ভোরে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় সাইফুল ইসলামের।
স্থানীয় সূত্রে জনা গেছে, নিহত সাইফুল ইসলামের জানাজার নামাজ হওয়ার কথা ছিলো শনিবার দুপুরে। কিন্তু তার স্বজনরা মনে করেন, ওঝা দিয়ে ঝাড়লে সাপে কাটা রোগী ভালো হয়। তাই সাভার থেক ওঝা এনে সাইফুলকে বাঁচানোর জন্য চেষ্টা চালাচ্ছেন তারা। তবে সন্ধ্যার পর থেকে ওঝারা তাদের মূল কার্যক্রম শুরু করবে বলে জানা যায়।
সন্ধ্যার দিকে ওই স্থানে গিয়ে দেখা যায়, বাড়ির পাশে একটি মাঠে ওঝারা সাপের কামড়ে মৃত রোগীকে চিকিৎসা দেওয়ার জন্য নানা রকম আয়োজন করেছে। মাঠের চারপাশে ৪টি কলাগাছ পুঁতে দেওয়া হয়েছে। পাশে রয়েছে কয়েকটি পানির কলসি। মাঝখানে মৃত ব্যক্তিকে রাখার জায়গা করা হয়েছে।
তবে স্থানীয়রা জানায়, যেখানে চিকিৎসকরা সাইফুলকে মৃত ঘোষণা করেছেন, সেখানে ওঝারা তাকে কিভাবে বাঁচাবে।
এ বিষয়ে কালিয়াকৈর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এএফএম নাসিম জানান, কালিয়াকৈর উপজেলার পশ্চিম বাসুরা এলাকায় এক ব্যক্তিকে সাপে কামড়েছে বলে সকালেই শুনেছি। পরিবারের আশা, যদি ওঝারা সাইফুলকে ভালো করতে পারেন!
সেজন্য এই আয়োজন করেছেন তারা। ওই স্থানে উৎসুক জনতার ভিড় রয়েছে। কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা যেন না ঘটে সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। তবে ওঝাদের বিষয়ে কোনও ব্যবস্থা নেবেন কি না সে ব্যাপারে কিছু জানাননি এই কর্মকর্তা।