দেশজুড়ে ৬৮টি কলেজের নাম পরিবর্তন করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। নতুন তালিকায় রয়েছে গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার ‘সরকারি শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ ডিগ্রি কলেজ’-এর নামও। নতুন করে কলেজটির নাম রাখা হয়েছে ‘কাপাসিয়া সরকারি ডিগ্রি কলেজ’।
এই সিদ্ধান্তে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদের ছেলে ও সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সোহেল তাজ।
বৃহস্পতিবার (২৯ মে) এক ফেসবুক পোস্টে তিনি জানান, বিষয়টি নিয়ে তাঁর ব্যক্তিগত আক্ষেপ না থাকলেও ইতিহাসের প্রতি এ ধরনের আচরণ দুঃখজনক। তাঁর ভাষায়, “আমার বাবা-মা দেশের জন্য অনেক কিছু করেছেন, কিছু পাওয়ার আশায় নয়। তাই যদি দেশ তাঁদের ত্যাগের স্বীকৃতি না-ও দেয়, সমস্যা নেই। বাংলাদেশ ভাল থাকলেই হলো।”
পরে তিনি ‘সরকারি শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ ডিগ্রি কলেজ’-এর এক সাবেক ছাত্রের দীর্ঘ একটি স্ট্যাটাস শেয়ার করেন, যেখানে কলেজটির নাম বদলানো নিয়ে অসন্তোষ ও প্রশ্ন তোলা হয়।
স্ট্যাটাসটিতে বলা হয়, কলেজটি অবস্থিত গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার রায়েদ ইউনিয়নের হাইলজোর গ্রামে—যা শহীদ বঙ্গতাজের বাড়ি দরদরিয়া থেকে মাত্র ৩ কিলোমিটার দূরে। বহু বছর আগেই কলেজটির নাম শহীদ তাজউদ্দীন আহমদের নামে রাখা হয় এবং সেই নামেই এটি সরকারিকরণ হয়।
সাবেক ছাত্রের বক্তব্য, “কাপাসিয়ায় ইতোমধ্যেই আরেকটি ডিগ্রি কলেজ রয়েছে—যার নাম ‘কাপাসিয়া ডিগ্রি কলেজ’। এখন এই নাম দিয়ে সরকারি কলেজটিকে চিহ্নিত করলে তা বিভ্রান্তির সৃষ্টি করবে। তাছাড়া কেন স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রীর নাম বাদ দেওয়া হলো, তার কোনো ব্যাখ্যা দেওয়া হয়নি।”
সোহেল তাজও কলেজটির নাম পরিবর্তনকে ‘বেদনাদায়ক’ বলে উল্লেখ করে বলেন, “এটা হয়তো শুধু একটা কলেজ, কিন্তু সেটি তাজউদ্দীন আহমদের নিজের ইউনিয়নের। সেখানে এই ধরনের পরিবর্তন কেবল কষ্টই দেয়।”
তিনি আরও বলেন, “বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল ভাঙার সময় কাপাসিয়ায় তাজউদ্দীন আহমদের ম্যুরালে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়েছিল। সেখানে এত বছর ধরে এই কলেজের নামে কোনো বিতর্ক ছিল না। এখন হঠাৎ কী ঘটল?”
এই ঘটনার প্রতিবাদে সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। কেউ কেউ এটিকে ‘ইতিহাস মুছে ফেলার অপচেষ্টা’ বলেও মন্তব্য করছেন।