বগুড়ার ধুনট উপজেলায় দুই ফ্রিল্যান্সারকে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়ের অভিযোগে পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অভিযানে তাদের কাছ থেকে নগদ ২ লাখ টাকা ও পুলিশের একটি ওয়াকিটকি উদ্ধার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃত পাঁচ পুলিশ সদস্য হলেন, শাহিন মোহাম্মদ অনু ইসলাম (উপপরিদর্শক, রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা শাখা), কনস্টেবল রিপন মিয়া, কনস্টেবল আবুল কালাম আজাদ, কনস্টেবল মাহবুব আলম, কনস্টেবল বাশির আলী। এছাড়া, তাদের বহনকারী মাইক্রোবাসের চালক মেহেদী হাসান-কেও আটক করা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, অভিযুক্ত পাঁচ পুলিশ সদস্য কোনো অনুমতি ছাড়াই রাজশাহী থেকে বগুড়ার ধুনট উপজেলায় আসেন। তারা চৌকিবাড়ি ইউনিয়নের দীঘলকান্দি গ্রামের দুই ফ্রিল্যান্সার রাব্বী ও জাহাঙ্গীরকে জুয়া খেলার অভিযোগে আটক করে মাইক্রোবাসে তুলে নেন। এরপর শেরপুর উপজেলার মির্জাপুর এলাকায় গাড়ি থামিয়ে তাদের কাছ থেকে ১২ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন।
দীর্ঘ দর-কষাকষির পর ভুক্তভোগীরা নগদ ২ লাখ টাকা ও মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা দিতে বাধ্য হন। মুক্তিপণ আদায়ের পর পুলিশ সদস্যরা তাদের ছেড়ে দেন।
বগুড়া জেলা পুলিশ ঘটনা জানতে পেরে শেরপুর ও শাজাহানপুর থানা এলাকায় মাইক্রোবাসটি আটকের চেষ্টা করে। পরে হাইওয়ে পুলিশের সহযোগিতায় শাজাহানপুর থানার বীরগ্রাম এলাকায় গাড়িটি আটক করা হয়।
পুলিশেল ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ জানায়, গ্রেফতারকৃত পুলিশ সদস্যরা কোনো অনুমতি না নিয়ে অসৎ উদ্দেশ্যে বগুড়ায় এসেছিলেন। এরপর তাদের আটক করা হয় এবং মুক্তিপণের ২ লাখ টাকা ও একটি ওয়াকিটকি উদ্ধার করা হয়।
প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, ধুনট উপজেলার বাসিন্দা ওয়াহাব নামের একজন কনস্টেবল রাজশাহী গোয়েন্দা শাখায় কর্মরত ছিলেন। তিনি দুই দিন আগে ছুটি নিয়ে বাড়ি আসেন এবং তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই অভিযুক্ত পাঁচজন ধুনট উপজেলায় আসেন।
বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (শেরপুর-ধুনট সার্কেল) সজীব শাহরীন বলেন, রোববার (২৩ মার্চ) দিবাগত রাত ৩টার দিকে বগুড়া-নাটোর মহাসড়কের বীরগ্রাম এলাকা থেকে পাঁচ পুলিশ সদস্য ও এক মাইক্রোবাস চালককে আটক করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”
এই ঘটনায় পুলিশের ভূমিকায় ব্যাপক সমালোচনা উঠেছে। ফ্রিল্যান্সারদের ওপর এমন অন্যায় আচরণে স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। পুলিশ বিভাগ থেকে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানা গেছে।
এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে স্থানীয় বাসিন্দারা।