দেশের মোট জনসংখ্যার মধ্যে পুরুষের চেয়ে নারীর সংখ্যাই বেশি বলে জানিয়েছে, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)। গৃহগণনা ও জনশুমারি প্রকল্পের চূড়ান্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী, বর্তমানে বাংলাদেশের জনসংখ্যা ১৬ কোটি ৯৮ লাখ ২৮ হাজার ৯১১। এর মধ্যে নারীর সংখ্যা ৮ কোটি ৫৬ লাখ ৮৬ হাজার ৭৮৪ এবং পুরুষের সংখ্যা ৮ কোটি ৪১ লাখ ৩৪ হাজার ৩ জন।
মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)।
এ উপলক্ষ্যে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে সংস্থাটির মিলনায়তনে প্রকাশনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেখানে বলা হয়, দেশের বিভাগীয় শহরগুলোর মধ্যে ঢাকায় সবচেয়ে বেশি জনবসতি। প্রায় ৪ কোটি ৫৬ লাখ ৪৪ হাজার ৫৮৬ জন ঢাকায় বসবাস করেন। প্রতিবেদন প্রকাশনা অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী (এম এ) মান্নান।
বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব মোছা: শাহনাজ আরেফিন। প্রকল্প পরিচালক দিলদার হোসেন মূল প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন। এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর মহাপরিচালক মো: মিজানুর রহমান।
বিভাগভিত্তিক জনসংখ্যার মধ্যে চট্টগ্রামে ৩ কোটি ৪১ লাখ ৭৮ হাজার ৬১২, রাজশাহীতে ২ কোটি ৭ লাখ ৯৪ হাজার ১৯, রংপুরে ১ কোটি ৮০ লাখ ২০ হাজার ৭১, খুলনায় ১ কোটি ৭৮ লাখ ১৩ হাজার ২১৮, ময়মনসিংহে ১ কোটি ২৬ লাখ ৩৭ হাজার ৪৭২, সিলেটে ১ কোটি ১৪ লাখ ১৫ হাজার ১১৩ এবং বরিশাল বিভাগে ৯৩ লাখ ২৫ হাজার ৮২০ জন বসবাস করেন।
দেশে বিভিন্ন ধর্মাবলম্বীর সংখ্যা ২০১১ সালে ধর্মভিত্তিক জনসংখ্যার মধ্যে মুসলিম জনগোষ্ঠীর সংখ্যা ৯০.৩৯ শতাংশ, এখন ২০২২ সালে তা বেড়ে দাঁড়িছে ৯১.০৮ শতাংশ।
আগে সনাতন ধর্মাবলম্বীর সংখ্যা ছিল ৮.৫৪ শতাংশ। এখন কমে দাড়িয়েছে ৭.৯৬ শতাংশ।
বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীর সংখ্যা আগে ছিল ০.৬২ শতাংশ। এখন কমে দাঁড়িয়েছে ০.৬১ শতাংশ।
আগে খ্রিস্টান জনগোষ্ঠীর সংখ্যা ছিল ০.৩১ শতাংশ। এখন কমে দাঁড়িয়েছে ০.৩০ শতাংশ। আগে অন্যান্য ধর্মের সংখ্যা ছিল ০.১৪ শতাংশ। এখন কমে হয়েছে ০.৬ শতাংশ।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়েছে, গত জুলাইয়ে দেশের মোট জনসংখ্যা ছিল ১৬ কোটি ৫১ লাখ ৫৮ হাজার ৬১৬ জন। অর্থাৎ যাচাই বাছাই করে নতুন যুক্ত হয়েছে প্রায় ৪৭ লাখ মানুষ। প্রাথমিক হিসাবে নানা কারণে ২.৭৫ শতাংশ মানুষ বাদ পড়েছিল। সর্বশেষ ২০১১ সালের গৃহগণনা ও আদমশুমারি অনুযায়ী, সেই সময় দেশের মোট জনসংখ্যা ছিল ১২ কোটি ৪৩ লাখ ৫৫ হাজার ২৬৩ জন।
চূড়ান্ত প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, দেশের মোট জনসংখ্যার মধ্যে গ্রামে বাস করেন ১১ কোটি ৬০ লাখ ৬৫ হাজার ৮০৪ জন। শহরে বাস করেন ৫ কোটি ৩৭ লাখ ৬৩ হাজার ১০৭ জন। বস্তিতে বাস করেন মোট জনসংখ্যা ১৭ লাখ ৩৬ হাজার ৩০২। এ ছাড়া, ভাসমান জনসংখ্যা ২২ হাজার ১৮৫ জন। ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর জনসংখ্যা ১৯৮১ সালে ছিল ৮ লাখ ৯৭ হাজার ৮২৮ জন। ৪১ বছর পর অর্থাৎ ২০২২ সালে দ্বিগুণ হয়ে হয়েছে প্রায় ১৬ লাখ ৫০ হাজার ৪৭৮ জন।