বগুড়ার শেরপুরে মোঃ আসাদুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে নিবন্ধন নম্বর জালিয়াতি ও প্রকৌশলীর ভুয়া পরিচয়ে প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে।
তিনি দাবি করেন, তিনি বগুড়া পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ডিপ্লোমা এবং ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেছেন। বর্তমানে তিনি ‘ডিজাইন অ্যান্ড প্ল্যানিং কনসালটেন্ট’ নামক একটি প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করছেন।
তবে অনুসন্ধানে দেখা গেছে, তিনি কখনও রাজউকের নিবন্ধিত প্রকৌশলী, কখনও বাংলাদেশ ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের (আইইবি) সদস্য, আবার কখনও ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স (আইডিই) এর সদস্য বলে পরিচয় দেন। কিন্তু সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর ওয়েবসাইট ঘেঁটে দেখা যায়, তার প্রদত্ত তথ্য সম্পূর্ণ ভুয়া।
রাজউকের নিবন্ধন নম্বর ০৩৪৮ ব্যবহার করে তিনি নিজেকে নিবন্ধিত প্রকৌশলী হিসেবে পরিচয় দেন। অথচ রাজউকের ওয়েবসাইট অনুযায়ী, এই নম্বরের প্রকৃত মালিক মোহাম্মদ নূর-আল-ফেরদৌস। একইভাবে, তিনি আইইবি সদস্য নম্বর ১৪৭৩৭ ব্যবহার করেন, যা প্রকৃতপক্ষে মুহাম্মদ সাকিল মিয়ার। এছাড়া, আইডিই সদস্য নম্বর ৬৫৮৫৫ ব্যবহার করেন, যার প্রকৃত মালিক মোঃ সামিম হোসেন।
ভুক্তভোগীদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা নিশ্চিত করেছেন যে, তাদের সদস্য নম্বর ব্যবহার করে প্রতারণা করা হচ্ছে। ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের ডেপুটি ম্যানেজার মুহাম্মদ সাকিল মিয়া বলেন, “আমার সদস্য নম্বর ব্যবহার করে প্রতারণা করায় আমি শঙ্কিত। আমি এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেব।”
প্রতারিত গ্রাহকদের মধ্যে রয়েছেন গাড়িদহ ইউনিয়নের শওকত শামীম, যিনি একজন কম্পিউটার প্রকৌশলী। তিনি বলেন, “শেরপুরে মানসম্মত প্রকৌশলী না থাকায় আমি আসাদুলের পদবি দেখে আকৃষ্ট হয়ে ২০২২ সালে ৪ তলা ভবনের নকশা করিয়ে নিই এবং ১৬ হাজার টাকা প্রদান করি। তবে ভবন নির্মাণের সময় নকশায় ত্রুটি ধরা পড়ে, যা পরে সংশোধন করতে হয়েছে।”
এ বিষয়ে অভিযুক্ত আসাদুল ইসলাম গণমাধ্যমে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে শেরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, “ভবনের নকশার সাথে বিভিন্ন দপ্তরের পরিকল্পনার সম্পৃক্ততা রয়েছে। কেউ যদি প্রতারিত হয়ে অভিযোগ দায়ের করেন, তাহলে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেব।”
এছাড়াও গ্রাহকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “ভবন নির্মাণের আগে প্রকৌশলীর বৈধতা যাচাই করতে সংশ্লিষ্ট সংস্থার ওয়েবসাইট পরিদর্শন করা এবং প্রমাণপত্র যাচাই করা উচিত। অন্যথায়, এমন প্রতারণার শিকার হয়ে তারা শুধু আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হবেন না, বরং নিরাপত্তার ঝুঁকিতেও পড়বেন।”