নোয়াখালীতে প্রবল বর্ষণ ও অস্বাভাবিক জোয়ারে তলিয়ে গেছে উপকূলের অনেক নিচু এলাকা। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে বৃহস্পতিবার (২৯ মে) সকাল ৯টা থেকে শুক্রবার সকাল ৯টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ২৮৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে, যা চলতি বছরের সর্বোচ্চ। ফলে নতুন করে দুর্ভোগে পড়েছেন জেলার বহু মানুষ।
নিম্নচাপের কারণে বৃষ্টির পাশাপাশি সমুদ্র উত্তাল হয়ে উঠেছে। জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি হওয়ায় কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার মুছাপুর, চরহাজারী ও চরএলাহী ইউনিয়ন এবং দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার নিঝুম দ্বীপসহ বেশ কিছু এলাকাও পানিতে তলিয়ে গেছে। জোয়ারের তোড়ে নদীর পাড়ের বাঁধ ভেঙে অনেক ঘরবাড়ি, পুকুর ও মাছের ঘের পানির নিচে চলে গেছে। ক্ষতি হয়েছে ধান, সবজি ও অন্যান্য ফসলি জমিরও।
স্থানীয়রা জানায়, নিঝুম দ্বীপের বেশিরভাগ নিচু এলাকায় জোয়ারের পানি ঢুকে পড়েছে। তলিয়ে গেছে প্রধান সড়ক, বাড়িঘর, এমনকি জাতীয় উদ্যানের অভয়ারণ্যে থাকা হরিণের চলাচলও ব্যাহত হচ্ছে। এছাড়া উত্তাল সাগর ও ঝড়ো হাওয়ার কারণে তিন দিন ধরে হাতিয়ার সঙ্গে সারাদেশের নৌ-যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।
হাতিয়ার মেঘনা নদীতে মালামালবোঝাই একটি পণ্যবাহী ট্রলার ‘এমভি প্রাহিম’ ডুবে গেছে। এতে প্রায় চার কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
জেলা শহর মাইজদীর পরিস্থিতিও ভিন্ন নয়। টানা বৃষ্টিতে শহরের হাউজিং এলাকা, ফ্ল্যাট রোড, শিল্পকলা একাডেমির পাশের সড়ক ও হাকিম কোয়ার্টার এলাকা পানিতে ডুবে গেছে। কিছু স্থানে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়নের বাসিন্দা মোমিন বাবলু বলেন, ‘সকাল থেকেই ভারি বৃষ্টি হচ্ছে। সড়কগুলো পানিতে তলিয়ে গেছে, অনেকের বাড়িতেও পানি ঢুকে পড়েছে। মানুষ আতঙ্কে আছে।’
জেলা প্রশাসক খন্দকার ইসতিয়াক আহমদ বলেন, ‘বৈরী আবহাওয়ার কারণে আমরা সর্বোচ্চ সতর্কতায় রয়েছি। উপজেলা প্রশাসন, রেডক্রিসেন্টসহ সংশ্লিষ্টরা কাজ করছে। ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা দেওয়া হবে।’