দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মহাপরিচালক আক্তার হোসেন বলেছেন, ২০১৪ সালে নিষ্পত্তি হওয়া পদ্মা সেতু দুর্নীতির মামলা পুনরায় তদন্তের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুদক। পদ্মা সেতুর পরামর্শক সাবেক সচিব মোশারেফ হোসেন ভুইয়াসহ মোট ৭ জনের বিরুদ্ধে আবারও অনুসন্ধান করবে দুদক।
মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) রাজধানীর সেগুন বাগিচায় দুদকের কার্যালয়ে এই সিদ্ধান্তের কথা জানান তিনি।
দুদকের মহাপরিচালক আক্তার হোসেন বলেন, ঘুষ লেনদেন ও ষড়যন্ত্রমূলক কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে পদ্মা সেতু প্রকল্পের নির্মাণকাজে পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের নির্মাণ তদারকি পরামর্শক নিয়োগ সংক্রান্ত দরপত্রের অন্যতম দরদাতা এসএনসি-লাভালিন ইন্টারন্যাশনাল ইনক-কে কার্যাদেশ পাইয়ে দেওয়ার অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র করায় রাজধানীর বনানী থানায় মামলা দায়ের করা হয়। মামলার তদন্ত শেষে ২০১৪ সালে আদালতে এফআইআর দাখিল করা হয়। ওই মামলাটি পুনঃপর্যালোচনা করে অধিকতর তদন্তের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুদক।
২০১২ সালের ডিসেম্বরের ১৭ তারিখে রাজধানীর বনানী থানায় (মামলা নং ১৯) মোট ৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে দুর্নীততি দমন কমিশন (দুদক)। এই মামলার এজাহারভুক্ত আসামি ছিলেন পদ্মা সেতু বিভাগের তৎকালীন সচিব মোশাররফ হোসেইন ভূঁইয়া, ইপিসির উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক গোলাম মোস্তফা, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী কাজী মোহাম্মদ ফেরদৌস, কানাডীয় প্রকৌশলী প্রতিষ্ঠান এসএনসি লাভালিনের ভাইস-প্রেসিডেন্ট কেভিন ওয়ালেস, আন্তর্জাতিক প্রকল্প বিভাগের সাবেক ভাইস-প্রেসিডেন্ট রমেশ শাহ, সাবেক পরিচালক মোহাম্মদ ইসমাইল ও সাবেক সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) নির্বাহী প্রকৌশলী মো: রিয়াজ আহমেদ জাবের।
প্রায় দেড় বছরের তদন্ত শেষে ২০১৪ সালের (৩ সেপ্টেম্বর) এই মামলা থেকে সব আসামিদের অব্যাহতি দেয় দুদক। এই মামলাটি তদন্ত করে দুদকের তৎকালীন উপ-পরিচালক মির্জা জাহিদুল আলমের নেতৃত্বাধীন টিম।
পদ্মা সেতু দুর্নীতির ষড়যন্ত্রে মামলার এজাহারে সন্দেহভাজনের তালিকায় ছিলেন শেখ হাসিনা সরকারের সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন। এছাড়াও মামলার এফআইয়ারটির মাধ্যমে তারাও এ অভিযোগ থেকে রেহাই পান।
পদ্মা সেতু দুর্নীতির মামলার এফআইয়ারটির বিষয়ে তৎকালীন দুদকের চেয়ারম্যান বদিউজ্জামান বলেছিলেন, এই মামলাটি ছিল দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের মামলা। তদন্তে আরও তথ্য পাওয়ার আশায় আমরা এই মামলাটি দায়ের করেছিলাম। তদন্তকালে দুদকের তদন্ত টিম দেশে এবং কানাডায় গিয়ে অভিযান চালায়। সেখানে গিয়ে কিছু কাগজপত্র সংগ্রহ করা হয়। বিশ্বব্যাংকের আশ্বাসের ভিত্তিতে এই মামলাটি দায়ের করা হলেও মামলাটি প্রমাণের জন্য দাতা সংস্থা ও কানাডা থেকে প্রয়োজনীয় তথ্য-প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এর ফলে শেষ পর্যন্ত মামলা থেকে আসামিদের অব্যাহতির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।