পিলখানা হত্যাকাণ্ড নিয়ে গঠিত জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশনের কাছে ইমেইলের মাধ্যমে লিখিত জবানবন্দি দিয়েছেন আওয়ামী লীগের দুই পলাতক সাবেক মন্ত্রী মির্জা আজম ও জাহাঙ্গীর কবির নানক। এ তথ্য জানিয়েছেন কমিশনের সভাপতি মেজর জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) আ ল ম ফজলুর রহমান।
বুধবার (২৫ জুন) রাজধানীর সায়েন্স ল্যাবরেটরির বিআরআইসিএম ভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান তিনি।
মেজর ফজলুর রহমান বলেন, এখন পর্যন্ত আটজন রাজনৈতিক নেতার সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে তিনজন কারাগার থেকে, তিনজন সরাসরি উপস্থিত হয়ে এবং মির্জা আজম ও নানক পলাতক অবস্থায় বিদেশ থেকে ইমেইলের মাধ্যমে সাক্ষ্য দিয়েছেন।
কমিশনের সভাপতি জানান, পিলখানা হত্যাকাণ্ডে তৎকালীন কিছু রাজনৈতিক ব্যক্তির সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে। তবে তদন্তের স্বার্থে এখনই কারও নাম প্রকাশ করেননি কমিশনার। তিনি বলেন, “হত্যাকাণ্ডের আলামত নষ্ট করার চেষ্টাও হয়েছিল। চাল-ডাল কর্মসূচি, জঙ্গি সংশ্লিষ্টতা ও মাদরাসা পড়ুয়া জনবল নিয়োগের মতো বিভ্রান্তিকর প্রচারণা চালানো হয়, যাতে মূল ঘটনা আড়াল থাকে।”
তিনি আরও জানান, ঘটনার সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিষ্ক্রিয়তা এবং গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর ব্যর্থতার কারণেই পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নেয়। সে সময় দ্রুত সামরিক পদক্ষেপ নেওয়া হলে প্রাণহানি কমানো সম্ভব হতো বলে মন্তব্য করেন তিনি।
এদিকে, পিলখানা হত্যাকাণ্ডে কমিশন আরও ১৪ জন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিকে সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য আহ্ববান জানিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তারিক আহমেদ সিদ্দিক, শেখ ফজলে নূর তাপস, শেখ সেলিমসহ আওয়ামী লীগের একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা।
উল্লেখ্য, ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর পিলখানায় তৎকালীন বিডিআরের (বর্তমান বিজিবি) সদর দপ্তরে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডে সেনাবাহিনীর ৫৭ জন কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন প্রাণ হারান। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন সময়ে প্রশ্ন উঠেছে রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা ও ঘটনাপরবর্তী ব্যবস্থা নিয়ে।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে দলটির অনেক শীর্ষ নেতা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান বলে বিভিন্ন সূত্র জানিয়েছে। এদের মধ্যে জাহাঙ্গীর কবির নানক ও মির্জা আজমের দেশত্যাগের খবরও গণমাধ্যমে আসে।