ফরিদপুরে কালীমাতা মন্দিরে আগুন দেয়ার অভিযোগে ৭ নির্মাণ শ্রমিকের উপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে ২ শ্রমিক নিহত ও ৫ জন গুরুতর আহত হয়েছে। আহতদের মধ্যে ১ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে। বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) সন্ধ্যার দিকে মধুখালী উপজেলার ডুমাইন ইউনিয়নের পঞ্চপল্লী গ্রামের একটি কালীমাতা মন্দিরে আগুন দেওয়াকে কেন্দ্র করে এ ঘটনা ঘটে।
এমন ঘটনায় এলাকাজুড়ে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে ফরিদপুর, মাগুড়া ও রাজবাড়ী জেলার বিপুল সংখ্যক র্যাব ও পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়েছে। শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) সকাল থেকে ৪ প্লাটুন বিজিবি টহলে থাকবে বলে জানায় জেলা প্রশাসক।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, মধুখালী উপজেলার পঞ্চপল্লী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সম্প্রসারণ কাজে নিয়োজিত ছিলেন কয়েকজন নির্মাণ শ্রমিক। স্কুলের পাশের একটি কালীমাতা মন্দিরে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর আগুন দেয়ার অভিযোগে স্থানীয় কয়েক’শ বিক্ষুদ্ধ হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন লাঠিসোটা নিয়ে স্কুলে থাকা ওই নির্মাণ শ্রমিকদের উপর হামলা চালায়।
আহত অবস্থায় তাদের উদ্ধার করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে শ্রমিক মো: আরশাদুল ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার ভাই মো: আশরাফুলের মৃত্যু হয়। নিহত ২ ভাই মধুখালী উপজেলার নওপাড়া ইউনিয়নের চোপের ঘাট এলাকার বাসিন্দা। আহত ৫ জন শ্রমিকরে মধ্যে ২ জনকে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ও অপর ৩ জনকে মধুখালী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
এ ঘটনার পর পঞ্চপল্লী গ্রামে বিপুল সংখ্যক র্যাব ও পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে শুক্রবার সকাল থেকে ৪ প্লাটুন বিজিবি টহলে থাকবে বলে জানান জেলা প্রশাসক। এ ঘটনাটির পর ওই এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। ঘটনার কিছুক্ষণ পর ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক এবং পুলিশ সুপার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
ফরিদপুরে কালীমাতা মন্দিরে অগ্নিকাণ্ডের বিষয়ে পুলিশ সুপার (এসপি) মো: মোর্শেদ আরম জানান, কালি মন্দিরে আগুন দেয়া হয়েছে এমন অভিযোগে স্কুলের নির্মাণ কাজে থাকা বেশ কয়েকজন শ্রমিকের উপর হামলা চালায় এলাকাবাসী।
পরে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। কিন্তু এলাকাবাসী পুলিশকে অবরুদ্ধ করে রাখেন। পরে ফরিদপুর, রাজবাড়ী ও মাগুড়া থেকে অতিরিক্ত পুলিশ এবং র্যাব পাঠানো হয়। এসময় পুলিশ বেশকিছু ফাঁকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। পরিস্থিতি যেন অবনতি না হয় সেজন্য ঘটনাস্থলে বিপুল সংখ্যক পুলিশ ও র্যাব সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসক মো: কামরুল আহসান তালুকদার বলেন, হামলার ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ ও র্যাব পাঠানো হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ৪ প্লাটুন বিজিবি তলব করা হয়। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে তারা ঘটনাস্থলসহ ফরিদপুরের গুরুত্বপূর্ন স্থানে টহল দেবে। পরিস্থি এখন শান্ত রয়েছে।