ফেনীতে ভারী বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে মুহুরী ও সিলোনিয়া নদীর অন্তত ১১টি স্থানে বাঁধ ভেঙে গেছে। ফলে পরশুরাম ও ফুলগাজী উপজেলার প্রায় ২০টি গ্রাম প্লাবিত হয়ে পড়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন হাজারো মানুষ।
গতকাল মঙ্গলবার (৮ জুলাই) বিকেল থেকে নদ-নদীর পানি হঠাৎ বৃদ্ধি পেয়ে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে চাপ সৃষ্টি করে। এতে মুহুরী নদীর ফুলগাজী অংশে চারটি ও পরশুরামের সিলোনিয়া নদীর অংশে সাতটি ভাঙন সৃষ্টি হয়।
মুহুরী নদীর ভাঙনে পরশুরাম উপজেলার চিথলিয়া ইউনিয়নের মধ্যম ধনীকুন্ডা, নোয়াপুর ও শালধর এলাকায় তিনটি স্থান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফুলগাজী উপজেলার দেড়পাড়া ও নাপিত কোনা এলাকায় আরও তিনটি ভাঙন সৃষ্টি হয়েছে।
সিলোনিয়া নদীর ভাঙনে মির্জানগর ইউনিয়নের পশ্চিম গদানগর, জঙ্গলঘোনা, উত্তর মনিপুর দাসপাড়া ও মেলাঘর কবরস্থান সংলগ্ন এলাকায় চারটি ভাঙন হয়েছে। এতে আশপাশের বহু ঘরবাড়িতে পানি ঢুকে পড়েছে।
পরশুরামের উত্তর মনিপুর এলাকার বাসিন্দা রহমান মিয়া বলেন, ‘বল্লামুখা বাঁধের পুরোনো ভাঙন এখনো মেরামত করা হয়নি। পানি উন্নয়ন বোর্ডের গাফিলতির কারণেই এবারও আবার সেই স্থান দিয়ে পানি ঢুকেছে। নদীর নাব্যতা না ফিরলে প্রতিবছর এমন দুর্ভোগ পোহাতে হবে।’
ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আবুল কাশেম জানান, ‘আমরা এখন পর্যন্ত প্রায় ১১টি বাঁধ ভাঙনের খবর পেয়েছি’। আরও খোঁজ-খবর নিচ্ছি। মাঠপর্যায়ে আমাদের কাজ চলমান রয়েছে বলেও জানান তিনি।
এদিকে টানা বৃষ্টিতে ফেনী শহরের বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। ডাক্তারপাড়া, শহীদ শহিদুল্লা কায়সার সড়ক, পুরাতন রেজিস্ট্রি অফিস, শাহীন একাডেমি এলাকা, পাঠানবাড়ি, নাজির রোড, মিজান রোড, সদর হাসপাতাল মোড় ও পেট্রোবাংলা এলাকার নিচু রাস্তাগুলো পানিতে তলিয়ে গেছে। দোকানপাটে পানি ঢুকে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তবে বিকেলের পর থেকে পানি কিছুটা নামতে শুরু করে।
ফেনী আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো: মজিবুর রহমান জানান, জেলায় গত দুই দিনে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। গতকাল রাত ৯টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৪’শ ৪১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এটি গত কয়েক বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। আগামী ৩ দিন এই বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানান তিনি।’