ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আইএইচটির শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছে। বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালের ৩য় শ্রেণীর স্টাফ কোয়ার্টারের ১টি ভবন থেকে অন্তরা পানুয়া নামের এক শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত অন্তরা পানুয়া পটুয়াখালী জেলা সদরের খলিসাখালী গ্রামের অনুকুল চন্দ্র পানুয়ার মেয়ে। সে বরিশাল ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজ’র ডেন্টাল অনুষদের ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিল বলে জানিয়েছেন অধ্যক্ষ ডা. মানষ কৃষ্ণ কুন্ডু।
প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, অন্তরা গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। আত্মহত্যার সঠিক কারণ এখনও জানা না গেলেও মৃত্যুর আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে তার দেওয়া স্ট্যাটাসের সূত্র বলছে এই শিক্ষর্থীর কারও সাথে সম্পর্কের সূত্র ধরে তিনি আত্মহত্যা করে থাকতে পারেন।
জানা গেছে, অন্তরা আইএইচটি’র শিক্ষার্থী হলেও শেবাচিম হাসপাতালের স্টাফ কোয়ার্টার থেকে তার মরদেহ উদ্ধার হওয়ায় রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। যদিও নিহতের রুমমেট সুমাইয়া জানিয়েছে, কলেজের শিক্ষক
মো: তাহেরুল ইসলাম সুমনের মাধ্যমে তারা ১দিন আগে এই কোয়ার্টের পেছনের ব্লকের ভবনের ৩য় তলার ফ্লাটটিতে ওঠেন। তিনি আরো জানিয়েছে, তারা এর আগে যেখানে থাকতেন সেখান থেকে মাত্র ১দিন আগে শেবাচিম হাসপাতালের ৩য় শ্রেণীর কর্মচারীদের এই কোয়ার্টারের ৩য় তলার ফ্লাটটিতে ওঠেন। ২য়তলায় তাদের শিক্ষক সুমন থাকেন এবং তার মাধ্যমেই এই ভবনের ৩য় তলায় তারা উঠেছেন। শিক্ষক সুমন সম্পর্কে মামা হন জানিয়ে সুমাইয়া বলেন, আমরা এখানে কিছুদিনের জন্য থাকতে এসেছিলাম, নতুন বাড়ি ভাড়া নিয়ে সেখানে যাব। কিন্তু তার আগেই আমার রুমমেট অন্তরা আজ আত্মহত্যা করলো। আত্মহত্যার সঠিক কারণ জানা নেই তিনি আরও বলেন, আজ সকালে ঘুম থেকে উঠে অন্তরার রুমের জানালা দিয়ে দেখতে পাই সে রুমে সেলিং ফ্যনের হুকের সঙ্গে গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলে আছে।
এদিকে অন্তরার চার বছর আগে জনৈক তাপস নামের এক ব্যক্তির সঙ্গে বিয়ে হয়। তার হাসবেন্ড চাকরির কারণে বরিশালে থাকেন না জানিয়ে তার সহপাঠীরা বলেন, স্বামীর সাথে কলহ কিংবা অন্য কোন কারণে অন্তরা তার নিজ ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে আত্মহত্যা করতে পারেন। সম্প্রতি অন্তরা প্রচন্ড মানসিক চাপে ছিল।
বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসাপাতালের উপ-পরিচালক ডা. মো: মনিরুজ্জামান শাহীন জানান, কীভাবে মেডিক্যাল কলেজ থেকে ১জন কর্মচারীর নামে ওই ফ্লাট ওই শিক্ষার্থীদের দেওয়া হয়েছে তা আমরা জানি না। তবে সম্প্রতি বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখেছি কোয়র্টারগুলোর অনেক ফ্লাট খালি ও পরিত্যাক্ত রয়েছে। আবার কিছু ফ্লাট বরাদ্দ হলেও সেখানে যথাযথ লোক থাকছেন না। এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার কার্যক্রম চলমান রয়েছে। আর ৩য় শ্রেণীর কোয়ার্টারে আইএইচটির শিক্ষার্থীর অবস্থান এবং আত্মহত্যার বিষয়টি পুলিশের পাশাপাশি আমরাও খতিয়ে দেখবো এবং নিয়মানুযায়ী পরবর্তীতে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
কোতোয়ালি মডেল থানার (এসআই) রেজাউল ইসলাম রেজা বলেন, আত্মহত্যার বিষয়টি তদন্ত করে দেখছি। অন্তরার মরদেহ উদ্ধার করে সুরতহাল শেষে মর্গে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।