মাদক কারবারে জড়িত থাকার অভিযোগে বগুড়ায় জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের অভিযানে তিন পুলিশ সদস্য ও এক আনসার সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এসময় তাদের কাছ থেকে মোট ৮৫০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৩০ মে) সন্ধ্যা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত শহরের বিভিন্ন এলাকায় একযোগে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। শুক্রবার (৩১ মে) বিকেলে আদালতের মাধ্যমে চারজনকে কারাগারে পাঠানো হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন, বগুড়া পুলিশ লাইন্সে কর্মরত নায়েক আব্দুল আলীম (৩৩), জয়পুরহাট ট্রাফিকে কর্মরত কনস্টেবল সাখাওয়াত হোসেন (৩৭), রাজশাহী রেঞ্জ রিজার্ভ ফোর্সের (আরআরএফ) সদস্য আব্দুল ওয়াহাব (৪০) এবং শফিপুর আনসার একাডেমির আনসার সদস্য আবু সুফিয়ান (৪২)।
পুলিশ সুপার জেদান আল মুসা বলেন, “পুলিশের পোশাকধারী কেউ অপরাধ করলে বাহিনী তার দায় নেবে না। আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।”
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে সাতমাথার একাত্তর আবাসিক হোটেলের সামনে মাদক কেনাবেচার খবরে অভিযান চালায় ডিবি পুলিশ। এ সময় পালানোর চেষ্টা করলে তিনজনকে আটক করা হয়। তাদের সঙ্গে থাকা ব্যাগ তল্লাশি করে আনসার সদস্য আবু সুফিয়ানের কাছ থেকে ৭০০ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়।
আবু সুফিয়ানের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আরও দুটি নাম উঠে আসে, সাখাওয়াত হোসেন ও আব্দুল ওয়াহাব। ডিবির ভাষ্যমতে, তারা বিকাশে ইয়াবা বিক্রি করে টাকা গ্রহণ করতেন। শুধু সাখাওয়াত হোসেনের বিকাশ নম্বর থেকে ২৭ হাজার টাকার লেনদেনের প্রমাণ পাওয়া গেছে।
এরপর রাতে নবাববাড়ী সড়কের পুলিশ প্লাজার কাছ থেকে নায়েক পুলিশ সদস্য আব্দুল আলীমকে ধরে ফেলে ডিবি সদস্যরা। তার সঙ্গে থাকা ব্যাগে পাওয়া যায় ১৫০ পিস ইয়াবা। পরে রাত সাড়ে ১০টার দিকে শহরের মাটিডালি এলাকায় আবারও অভিযান চালিয়ে তাকে পুনরায় আটক করে আরেকটি ডিবি টিম। এরপর উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্দুল কুদ্দুস বাদী হয়ে ৪ জনকে আসামি করে সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
পুলিশ সূত্র জানা যায়, গ্রেফতারকৃত চারজন আগে থেকেই একে অপরের পরিচিত। তারা ঢাকায় থাকাকালীন বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজে যুক্ত ছিলেন। ২০২৩ সালের ৫ আগস্টের পর চারজনই বিভিন্ন জেলায় বদলি হন, তবে যোগাযোগ অব্যাহত রেখে তারা মাদক কারবার চালিয়ে যাচ্ছিলেন।
তাদের মধ্যে আনসার সদস্য আবু সুফিয়ান এক সময় সমাজকল্যাণমন্ত্রীর বাসভবনে ডিউটি করতেন, আর কনস্টেবল সাখাওয়াত হোসেন বঙ্গভবনে দায়িত্ব পালন করেন। অপর দুইজন আগে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশে কর্মরত ছিলেন।