বগুড়ায় মাদকের বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযান চালাচ্ছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। শহরের চকসূত্রাপুর কলোনিতে অভিযান চালিয়ে ব্যাপক মাদক উদ্ধারের মাত্র তিনদিন পর এবার শহরের প্রাণকেন্দ্র সাতমাথা সংলগ্ন রেলওয়ে কলোনিতে ব্লক রেইড চালায় সেনাবাহিনীর সদর ক্যাম্পের আভিযানিক দল।
রোববার (০১ জুন) দিবাগত রাত ২টা থেকে সোমবার (২ জুন) সকাল ৯টা পর্যন্ত টানা সাত ঘণ্টাব্যাপী চলে এ অভিযান। সেনাবাহিনী ঘিরে ফেলে সুইপার কলোনিসহ আশপাশের পুরো এলাকা, তল্লাশি চালানো হয় প্রায় অর্ধশত ঘরে।
এ সময় উদ্ধার করা হয় এক রাউন্ড তাজা গুলি, এক হাজার বোতল দেশীয় চোলাই মদ, প্রায় দুই কেজি গাঁজা, ২৫টি দেশীয় অস্ত্র ও ১০ লাখ টাকারও বেশি মাদক বিক্রির নগদ অর্থ। এছাড়া, এক নারীসহ চার মাদক ব্যবসায়ীকে হাতেনাতে আটক করে সেনাবাহিনী।

আটককৃতরা হলেন, মিঠুন, শান্ত, সুজন ও রাজকুমারী। তারা সবাই রেলওয়ে কলোনির বাসিন্দা।
অভিযান পরিচালনা করেন ক্যাপ্টেন জানে আলম সাদিফ ও লেফটেন্যান্ট আল ফাহাদের নেতৃত্বে ৫০ জন সেনা সদস্য।

জানা গেছে, জেলার বিভিন্ন এলাকায় দীর্ঘদিন ধরেই গড়ে উঠেছে মাদকের স্থায়ী আস্তানা। মাঝে মাঝে প্রশাসনের আংশিক অভিযান চললেও তা মাদককারবারীদের দৌরাত্ম্য থামাতে ব্যর্থ হয়েছে। বরং অনেক ব্যবসায়ী মাদক বিক্রির টাকায় বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছেন, যার একটা অংশ চলে গেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কিছু অসাধু সদস্যের পকেটে।
তবে সেই সিন্ডিকেটের লাগাম টেনে ধরেছে সেনাবাহিনী। শহরের দুইটি স্পটে টানা সফল ব্লক রেইড পরিচালনার পর এবার আরও কয়েকটি স্পটে অভিযান চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে সেনা সদস্যরা।
একাধিক সূত্র জানিয়েছে, শুধু মাদক নয়—চাঁদাবাজ, কিশোর গ্যাং এবং সমাজবিরোধী অপরাধীদের বিরুদ্ধেও দ্রুত অভিযান শুরু করতে যাচ্ছে সেনাবাহিনী।
সেনাবাহিনীর টানা অভিযানে শহরবাসীর মধ্যে স্বস্তি ফিরেছে। দল-মত নির্বিশেষে সবাই এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। এলাকাবাসীর দাবি, শুধু অভিযান নয়, এ ধরনের চিরুনি তল্লাশি যেন নিয়মিতভাবে অব্যাহত থাকে।
বগুড়া সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ফিরোজ মিয়া বলেন,”উদ্ধার করা মাদকদ্রব্য ও দেশীয় অস্ত্র জব্দ করা হয়েছে। আটক চারজনের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বর্তমানে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। আইগত প্রক্রিয়া শেষে আসামিদের আদালতে পাঠানো হবে বলে জানান তিনি।”