বরগুনায় শ্যালিকাকে ধর্ষণের চেষ্টায় ব্যর্থ হলে ক্ষুব্ধ হয়ে দুই শিশুকে নৃশংসভাবে হত্যা ও শ্যালিকাকে হত্যাচেষ্টার দায়ে মো. ইলিয়াস পহলানকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। রায়ের পাশাপাশি তাকে এক লাখ টাকা অর্থদণ্ডও দেওয়া হয়েছে।
রোববার (২৭ এপ্রিল) দুপুরে বরগুনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক বেগম লায়লাতুল ফেরদৌস রায় ঘোষণা করেন।
একই মামলায় ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে ইলিয়াসকে ১০ বছরের কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, পাশাপাশি হত্যাচেষ্টার অপরাধে আরও ১০ বছরের কারাদণ্ড এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
দণ্ডপ্রাপ্ত মো. ইলিয়াস পহলান বরগুনা সদর উপজেলার পূর্ব কেওয়াবুনি গ্রামের বাসিন্দা।
মামলার বিবরণ অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ৪ আগস্ট রাতে বরগুনা সদর উপজেলার রোডপাড়া গ্রামে নিজের ঘরে মেয়েকে (৩) ও প্রতিবেশীর ছেলে হাফিজুরকে (১৩) নিয়ে ঘুমাচ্ছিলেন রিগান আক্তার। রাতের নির্জনতায় রিগানের বোনজামাই ইলিয়াস ঘরে ঢুকে তাকে ধর্ষণের চেষ্টা চালায়। বাধা পেয়ে রিগান ও ইলিয়াসের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়। এ সময় শিশু তাইফা ও হাফিজুর জেগে ওঠলে ইলিয়াস ক্ষিপ্ত হয়ে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে তিনজনের ওপর হামলা চালায়।
ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারায় হাফিজুর, আর বরিশালে নেয়ার পথে মারা যায় ছোট্ট তাইফা। গুরুতর আহত রিগান দীর্ঘ চিকিৎসার পর বেঁচে গেলেও আজীবনের জন্য বয়ে বেড়াতে হবে সেই ভয়াবহ রাতের ক্ষত।
ঘটনার পর পুলিশ দ্রুত অভিযান চালিয়ে ইলিয়াসকে গ্রেফতার করে এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের হয়। মামলার তদন্ত শেষে তার বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করা হয় এবং তিনজন প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষীর জবানবন্দির ভিত্তিতে আদালত এ দণ্ডাদেশ দেন।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পিপি রনজুয়ারা সিপু জানান, “কম সময়ে দেওয়া এই দৃষ্টান্তমূলক রায় অপরাধ প্রবণতা কমাতে বড় ভূমিকা রাখবে। ভুক্তভোগী পরিবার ন্যায়বিচার পেয়েছে, যা আমাদের জন্য স্বস্তিদায়ক।”