রাজধানীর বাড্ডায় গুলিতে নিহত গুলশান থানা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কামরুল আহসান সাধন হত্যাকাণ্ডে মামলা হয়েছে। ঘটনার পরদিন সোমবার (২৬ মে) সকালে নিহতের স্ত্রী দিলরুবা আক্তার বাদী হয়ে বাড্ডা থানায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন। মামলা নম্বর ৩৩।
এদিকে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জড়িত দুই বন্দুকধারীকে সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে শনাক্ত করেছে পুলিশ। তাদের গ্রেপ্তারে মাঠে নেমেছে পুলিশের পাশাপাশি র্যাবের একাধিক টিম।
বাড্ডা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘‘ঘটনার পরপরই আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। ফুটেজে দেখা গেছে, গুদারাঘাট চার নম্বর রোডে দুজন ব্যক্তি এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়ে হেঁটে চলে যাচ্ছে। তাদের চেহারা শনাক্ত করা গেছে, এখন গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’’
পুলিশ জানায়, নিহত কামরুল আহসান সাধনের বাড়ি গুদারাঘাট এলাকায়। তিনি পেশায় একজন ইন্টারনেট ব্যবসায়ী ছিলেন। রাজনৈতিক পরিচয়ের পাশাপাশি স্থানীয়ভাবে তার প্রভাবও ছিল।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, রোববার রাতে গুদারাঘাট ৪ নম্বর রোডের সাবেক কমিশনার কাইয়ুমের কার্যালয়ের বিপরীতে একটি চায়ের দোকানে বসে ছিলেন বিএনপি নেতা সাধন। তার সঙ্গে ছিলেন কাইয়ুমের ভাগ্নে কামরুল ও আরও কয়েকজন। হঠাৎ করে দুই যুবক মুখে মাস্ক পরে এসে এলোপাতাড়ি গুলি চালায়।
গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই পড়ে যান সাধন। গুলির শব্দে আশপাশে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। হামলাকারীরা পালিয়ে যাওয়ার সময় ফাঁকা গুলি ছুড়ে ভয় তৈরি করে।
রক্তাক্ত অবস্থায় স্থানীয়রা সাধনকে উদ্ধার করে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, তার বুকের ডান ও বাম পাশে, পিঠে ও ঘাড়ে গুলি লেগেছে।
বাড্ডা থানার একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেন, “এই হত্যাকাণ্ড পূর্বপরিকল্পিত। যেভাবে গুলি করে নিশ্চিত মৃত্যু নিশ্চিত করে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে গেছে, তাতে পেশাদার শ্যুটার জড়িত বলে ধারণা করা হচ্ছে। ফুটেজ দেখে প্রাথমিকভাবে শনাক্ত হওয়া দুজনকে ধরতে অভিযান চলছে।”
সাধনের পরিবার বলছে, রাজনৈতিক কারণে এই হত্যাকাণ্ড হয়ে থাকতে পারে। তবে পুলিশ এখনই কিছু নিশ্চিত করেনি।