বিএনপি কর্মীরা কাকরাইল, শান্তিনগর ও মালিবাগ এলাকায় বেশ কয়েকটি পুলিশ বক্সে ও রাজারবাগ এলাকায় কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালের সামনে অগ্নিসংযোগ করে। এছাড়াও কাকরাইলে প্রধান বিচারপতির বাসভবনে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে বেশ কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করে।
বিএনপি-পুলিশ সংঘর্ষে ১ পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন। মহাসমাবেশে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে বিএনপি সমর্থকদের সাথে সংঘর্ষে এক পুলিশ নিহত ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বেশ কয়েকজন সদস্য আহত হয়েছেন।
নিহত পুলিশ সদস্যের নাম আমিনুল পারভেজ। তিনি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)তে কর্মরত ছিলেন। দৈনিক বাংলা ক্রসিংয়ের কাছে রক্তাক্ত অবস্থায় তার লাশ পড়ে থাকতে দেখা যায়।
বিএনপি-পুলিশ সংঘর্ষে নিহত পুলিশ সদস্যকে তাৎক্ষণিক তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরী বিভাগে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে আরও ১১ জন পুলিশ সদস্যকে আহত অবস্থায় ভর্তি করা হয়। আওয়ামী লীগ এবং বিরোধী দল ঢাকায় একই সঙ্গে সমাবেশ ডাকায় ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যে আধা-সামরিক বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) মোতায়েন করা হয়। কর্মসূচি চলাকালে প্রধান বিরোধী দল বিএনপি শহরের কিছু অংশে পুলিশের সাথে সংঘর্ষে জড়িয়ে পরে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিএনপি কর্মীরা কাকরাইল, শান্তিনগর ও মালিবাগ এলাকায় বেশ কয়েকটি পুলিশ বক্সে ও রাজারবাগ এলাকায় কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালের সামনে অগ্নিসংযোগ করে। এছাড়াও কাকরাইলে প্রধান বিচারপতির বাসভবনে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে বেশ কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করে।
বিএনপি কর্মীদের প্রতিরুদ্ধ করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তাদের লক্ষ্য করে কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে ও লাঠি চার্জ করে। এ সময় বিজিবি সদস্যরাও দায়িত্বে ছিলেন।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা শাখার প্রধান হারুনুর রশিদ জানান, বিএনপি নেতা-কর্মীরা সরকারি স্থাপনা ও সম্পত্তিতে হামলা চালিয়েছে। এ ঘটনা তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
তিনি আরো বলেন, হামলায় বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। তাদের কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেই হাসপাতালেও হামলা চালানো হয়েছে।
এদিকে বিএনপি তাদের পরিকল্পিত সমাবেশে পুলিশের কর্মকান্ডকে দুঃখজনক বলে অভিহিত করে এর প্রতিবাদে আগামীকাল দেশব্যাপী সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ডেকেছে।
নির্দলীয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে বিএনপির নেতাকর্মীরা নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করে।
একই সময়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের গেটে হাজার হাজার সমর্থককে একত্রিত করে একটি শান্তি সমাবেশ করে।
দু’পক্ষের কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ ঠেকাতে দাঙ্গা পুলিশের সদস্যরা জলকামানসহ সঙ্গে পুরানা পল্টন এলাকায় দীর্ঘ বাফার জোন গড়ে তোলে।
পুলিশ গত রাতে শেষ মুহূর্তে উভয় পক্ষকে তাদের পছন্দের জায়গায় তাদের পরিকল্পিত সমাবেশ করার অনুমতি দেয়।নেতাকর্মীদের বাঁশের লাঠির মতো কিছু বহন করতে বাধা দেওয়াসহ বেশ কয়েকটি শর্তে তাদের এই অনুমতি দেয়া হয়।
শহরের বেশিরভাগ এলাকায় দোকান ও শপিং কমপ্লেক্সের মালিকরা সহিংসতার ভয়ে তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখেন। শহরে যান চলাচলও কম ছিল।
বিএনপি’র মিত্র জামায়াতে ইসলামী এর আগে পুলিশের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে পৃথক সমাবেশের ঘোষণা দিলেও তাদের কর্মী-সমর্থকরা শাপলা চত্বরে সমাবেশের চেষ্টা করলে পুলিশ লাঠিচার্জ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।